বন্ধুর সহযোগিতায় উচ্চমাধ্যমিক দিচ্ছেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী চয়ন

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ডিসেম্বর ৯, ২০২১, ০৬:২১ পিএম

বন্ধুর সহযোগিতায় উচ্চমাধ্যমিক দিচ্ছেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী চয়ন

জন্মগতভাবেই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী চয়ন তালুকদার। কিন্তু প্রতিবন্ধকতা তো জীবনকে বেঁধে রাখতে পারে না। থেমে থাকেননি চয়নও। অন্ধত্বকে পরাজিত ইতোমধ্যে এসএসসি (মাধ্যমিক) পরীক্ষার ধাপ উৎরে অবতীর্ণ হয়েছেন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায়।

চয়নের এই অগ্রযাত্রায় শামিল তার বন্ধু মাজহারুল ইসলাম।

জগন্নাথপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী চয়ন তালুকদার। বন্ধুর সহযোগিতায় লিখে বিশেষ পদ্ধতিতে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের নিতাই তালুকদারের ছেলে চয়ন তালুকদার। 

বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) স্বরূপ চন্দ্র সরকারি উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রথম পরীক্ষা শেষে চয়ন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি তার আগ্রহ ছিল। তার সমবয়সী ছোটবোন যখন পড়তে বসত তখন তার পাশে বসে শুনে শুনে তিনি পড়া শিখে ফেলতেন। পরে সে ওই পড়া বলত অন্যজন লিখে দিত।

এভাবে তিনি এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে জগন্নাথপুর ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হন। কলেজ কর্তৃপক্ষের সহায়তায় শ্রুতি লেখন পদ্ধতিতে পরীক্ষায় অংশ নেন। তাঁকে শ্রুতি লেখনে সহায়তা করেন বন্ধু মাজহারুল ইসলাম। মাজরুল ইসলাম এসএসসি পরীক্ষার সময়ও শ্রুতি লেখনের দায়িত্ব পালন করেন। 

শ্রুতি লেখন মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘চয়ন বলে দেয় আমি শুধু খাতায় লিখে দিই। এতে আমাদের কোনো অসুবিধা হয় না। সে পড়ায় ভালো।’ 

চয়নের বাবা নিতাই তালুকদার বলেন, জন্মগত ভাবেই চয়নের দুই চোখ অন্ধ। তবে ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় তার আগ্রহ ছিল। ভাইবোন মিলে একসঙ্গে পড়ালেখা করে এবার দুজন এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। অভাব অনটনের কারণে ঠিকমতো তাদের পড়ালেখার খরচ জোগাতে পারছি না।  

জগন্নাথপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) জাহিদুল ইসলাম বলেন, চয়নকে শিক্ষা বোর্ড থেকে শ্রুতি লেখনের অনুমতি এনে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। আমরা তার সফলতা কামনা করছি। 

Link copied!