২০২১ সালের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ৫৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগস্ট ২৯, ২০২৪, ০৭:০৯ এএম

২০২১ সালের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ৫৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

শেখ হাসিনা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২০২১ সালের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ৫৪ জনের নামোল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে অজ্ঞাত আরও ২০০-৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার সদরের সুহিলপুর ইউনিয়নের মৃত আব্দুল লতিফ মিয়ার ছেলে বাবুল মিয়া বাদী হয়ে তার ভাই জহিরুল ইসলামকে হত্যার অভিযোগে এই মামলা করেন। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ওবায়দুল মুক্তাদী চৌধুরী সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি হেলাল উদ্দিনকে হুকুমের আসামি করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাফফর হোসেন। তিনি বলেন, “বাদীর টাইপ করা একটি এজাহার আমরা মামলা হিসেবে রুজু করি। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হেলাল উদ্দিন, বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. আবু সাঈদ, মাহবুবুল আলম খোকন, শফিউল আলম লিটন, জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বাড়ি চৌধুরী মন্টু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সাবেক সাংসদ মইন উদ্দিন মইন, এহতেশামুল বারি তানজিল, তানজিল আহমেদ, হাজী শফিউল্লাহ মিয়া, হানিফ মুন্সি, শাহানুর ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস, ভিপি হাসান, রাফি, নাসিমা মুকাই আলী, রফিকুল ইসলাম, আল আমন সওদাগর, আমজাদ হোসেন রনি, সদ্য সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বিল্লাল মিয়া, গোলাম মহিউদ্দিন স্বপন, সমর ভৌমিক, শাকিল, অ্যাডভোকেট আশরাফ উদ্দিন মন্তু, সদ্য সাবেক সরাইল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শের আলম, মাহবুব আলম, মাসুম বিল্লাহ, সদ্য সাবেক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন শোভন, জুয়েল, সাইফুদ্দিন, লিমন খান, স্বাধীন, ফজলু মেম্বার, তাজুল ইসলাম চেয়ারম্যান, ভিপি জায়েদুল হক, রাকিব আহমদ সোহেল, ইসতিয়াক আহমেদ দুলাল, তাজুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম, মোবারক হোসেন, তানভীর হায়দার, আশরাফ,বিল্লাল আহমেদ, সুজন দত্ত, অ্যাডভোকেট আব্দুল জব্বার, মামুন আলি, আজম জসীম উদ্দিন রানা, মিজানুর রহমান আনসারী, মাসুদুর রহমান, রহিম উদ্দিন আজিজুল হক।

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, ২০২১ সালের ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকে হেফাজতে ইসলাম। এ সময় তার (বাদী) ভাই জহিরুল ইসলাম এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। আন্দোলন প্রতিহতের জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বৈঠক করে হামলার নির্দেশ দেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও অন্যান্য আসামিরা ওই বৈঠক করে আন্দোলনকারীদের প্রতিহতের জন্য জেলার আন্দোলনকারীদের ওপর বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে হামলা চালান। আন্দোলনকারীরা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ামাত্রই আসামিরা হত্যার উদ্দেশ্যে নির্বিচারে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি ও ককটেল নিক্ষেপ করে। তাদের ছোঁড়া অসংখ্য গুলি ও ককটেলের আঘাতে বাদীর ভাই জহিরুল ইসলামের শরীরে বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক জখম হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত না করেই লাশ বাড়িতে নেওয়ার জন্য বলে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়।

মামলার অভিযোগপত্রে তৎকালীন সরকারি হস্তক্ষেপের কারণে মামলা করতে দেরি হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, বাদী ও তার লোকজন নিয়ে জহিরুল ইসলামের লাশ এলাকায় নিয়ে দাফন সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে থানায় মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ বাদীকে মামলা করা যাবে না বলে জানায়। মামলা করলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়।

Link copied!