মে ২১, ২০২৫, ০৪:৫৪ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিকে রাজনৈতিক বিষয় হিসেবে তুলে ধরে তা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ ‘নিরপেক্ষভাবে’ কাজ করে যাচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, জাতীয় ও স্থানীয় সরকারের নির্বাচনের মধ্যে কোনটি আগে-পরে হবে তা সরকারের উপরই নির্ভর করছে।
বুধবার, ২১ মে সকালে এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন-ইসির পঞ্চম সভা শেষে নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে করার দাবির মধ্যে নির্বাচন কমিশনের এ বক্তব্য এলো।
ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার-সিইসির সভাকক্ষে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে বৈঠক হয়। সিইসির সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এসময় নির্বাচন ভবনের বাইরে এনসিপির বিক্ষোভ চলছিল।
নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিতে নির্বাচন ভবনের বাইরে এনসিপির আন্দোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ বলেন, “রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে আমরা কোনো মতামত দিতে চাই না।”
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া ধারণা অনুযায়ী, এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী জুনের মধ্যে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের কথা রয়েছে।
এরইমধ্যে বিএনপি দ্রুত নির্বাচনের দাবি তুলেছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক দল এনসিপি সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দাবি করে আসছে।
স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে করার দাবির বিষয়ে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, “নির্বাচন কোনটা আগে হবে, কোনটা পরে হবে-এটা ইসির হাতে নেই। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে কোন নির্বাচন আগে হবে বা পরে হবে। ইসির দায়িত্ব নির্বাচন অনুষ্ঠান করা।”
এনসিপি নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেও ‘কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য নিয়ে’ মন্তব্য করতে চাননি নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ।
“কমিশন সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে ও করে যাবে,” বলেন তিনি।
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এরপর আর আপিল না করায় তা নিয়ে সমালোচনা চলছে।
এ বিষয়ে সানাউল্লাহ বলেন, “নির্বাচনি সব ধরনের আইন-বিধি পর্যালোচনা করা হয়েছে, তাতে ইসির পক্ষভুক্ত হওয়ার সুযোগ নেই। এছাড়া অতীতেও ইসির এ ধরনের পক্ষভুক্ত হওয়ার নজির নেই।”
নির্বাচন কমিশন কোন কোন আইন অনুসরণ করে পক্ষভুক্ত না হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাও তুলে ধরেন এই নির্বাচন কমিশনার।
তিনি বলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ, ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ৫০, স্থানীয় সরকার ও সিটি করপোরেশন আইন, ২০০৯ এর ধারা ৫৪, স্থানীয় সরকার ও পৌরসভা বিধিমালা, ২০১০ এর ধারা ৫৪, উপজেলা নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা ২০১৩, এর ধারা ৫৬, স্থানীয় সরকার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন বিধিমালা ২০১০ এর ধারা ৫৪-এই সবগুলোতে বলা আছে কাকে পক্ষভুক্ত করা যাবে। সেখানে নির্বাচন কমিশনকে কোনো পক্ষভুক্ত করার আইন নেই বলে সানাউল্লাহ দাবি করেন।
তিনি বলেন, “আইনের যেহেতু নেই সেহেতু স্বাধীনতার পর থেকে আজ অবধি আমরা ফাইল ঘেঁটে দেখেছি, নির্বাচন কমিশন পক্ষভুক্ত হয়ে আবেদন করেছে কি না, আপিল করেছে কি না। আমরা এমন কোনো নথি পাইনি। সুতরাং পক্ষভুক্ত হওয়ার ব্যাপারে আইন আমাদের সুযোগ দেয়নি।”
কমিশনের পঞ্চম সভা বিষয়ে সানাউল্লাহ বলেন, সেখানে আচরণবিধি ও ভোটকেন্দ্র নীতিমালার খসড়া নীতিগতভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।