শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় শিল্পী পাপিয়ার শেষ বিদায়

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ডিসেম্বর ১৩, ২০২৪, ০২:১৮ পিএম

শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় শিল্পী পাপিয়ার শেষ বিদায়

ফাইল ছবি

প্রয়াত রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী এবং ছায়ানটের প্রাক্তন সদস্য পাপিয়া সারোয়ারকে ফুলেল শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় বিদায় জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ।

একুশে পদকজয়ী এই সংগীতশিল্পীকে চিরবিদায় জানানোর জন্য প্রথমে নিয়ে আসা হয় ছায়ানটে। পরে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য নিয়ে আসা হয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে।

দীর্ঘদিন ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে পাপিয়া মৃত্যুবরণ করেন ১২ ডিসেম্বর। তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।

ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার পর ২০২১ সাল থেকে তিনি দেশ-বিদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। সম্প্রতি অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার ইমপালস হাসপাতালে তাকে ‘লাইফ সাপোর্ট‍‍` দেওয়া হয়। বুধবার রাতে খবর আসে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে পৌঁছে গেছেন শিল্পী। সেখান থেকে তাকে আর ফেরানো যায়নি।

সকাল ৯টায় ছায়ানট ভবনে পাপিয়ার মরদেহ আনা হলে রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের সহসভাপতি মফিদুল হক, ছায়ানটের সহসভাপতি খাইরুল আনাম শাকিল, সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসাসহ অনেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় সাংগঠনিকভাবে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদ, ছায়ানট ও উত্তরায়ণ।

ছায়ানট থেকে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শিল্পীর মরদেহ আনা হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে। সেখানে জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সংস্থার ব্যবস্থাপনায় শ্রদ্ধা জানিয়েছেন অনেকে।

এছাড়া জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সংস্থা, সত্যেনসেন শিল্পী গোষ্ঠী, সুরবিহার, স্বনন, নীতিসুধা, সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

সেখানে পাপিয়ার পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণিপেশার অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

পাপিয়া সারোয়ারের স্বামী সারোয়ার এ আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন বাদ জুম্মা ধানমন্ডির ঈদগাঁ মাঠে জানাজার পর বনানী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হবে।

পাপিয়া সারোয়ারের খ্যাতি রবীন্দ্রসংগীতে। আধুনিক গানেও তিনি পরিচিত। ১৯৭৮ সালের প্রথম দিকে বিটিভির একটি অনুষ্ঠানে প্রচার হয় পাপিয়ার ‘নাই টেলিফোন নাইরে পিয়ন নাইরে টেলিগ্রাম’ গানটি। এই গানটি তাকে রবীন্দ্র সংগীতশিল্পীর বাইরে আলাদা একটি পরিচিতি এনে দেয়।

২০১৩ সালে তিনি বাংলা একাডেমি থেকে রবীন্দ্র পুরস্কার পান। ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমি ফেলোশিপ লাভ করেন। চলতি বছর চ্যানেল আইয়ের আয়োজনে রবীন্দ্রমেলায় পাপিয়া সারোয়ারকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়।

বরিশালের মেয়ে পাপিয়া প্রাণিবিদ্যা বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে ১৯৭৩ সালে তিনি রবীন্দ্রসংগীতে ডিগ্রি নিতে যান বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে।

তার আগে তিনি ১৯৬৬ সালে ছায়ানটে ওয়াহিদুল হক, সনজীদা খাতুন এবং জাহেদুর রহিমের কাছে এবং পরবর্তীতে বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে সংগীত দীক্ষা নেন।

তার দুই মেয়ের মধ্যে জারা সারোয়ার থাকেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে; আর ছোট মেয়ে জিশা সারোয়ার থাকেন কানাডায়।

Link copied!