কেমন ছিল সাকিবের চার বিশ্বকাপ?

মেহেদী ইসলাম

সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৩, ০৩:০৭ পিএম

কেমন ছিল সাকিবের চার বিশ্বকাপ?

সংগৃহীত ছবি

সাকিব আল হাসান, ইতিমধ্যেই বিশ্ব মানচিত্রে আলোকিত করে তুলেছেন বাংলাদেশকে। তালিকার শীর্ষস্থানে অবস্থান করে বিশ্ব ক্রিকেটে রাজত্ব করছেন দীর্ঘদিন ধরে। এ পর্যন্ত খেলেছেন চারটি বিশ্বকাপ। প্রতিটি টুর্নামেন্টেই নিজেকে মেলে ধরেছেন তিনি। সামনের মাসেই শুরু হতে যাচ্ছে বিশ্বকাপের এবারের আসর। সাকিবের জন্য যেটি পঞ্চম। পঞ্চম বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স দেখা যাবে সামনে। তবে কেমন ছিল সাকিবের গত চার বিশ্বকাপ? চলুন দেখে আসি।

সাকিব প্রথম বিশ্বকাপ খেলেন ২০০৭ সালে। সেবার ব্যাট হাতে সাকিব ২৮.৮৬ গড়ে সর্বমোট রান করেছিলেন ২০২। ভারত ও ইংল্যান্ডের সাথে খেলেছিলেন ৫৩ ও ৫৭ রানের দুইটি গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। বল হাতে ৭ উইকেট নিলেও ৪.৯৬ এর ইকোনমি রেট ছিল চোখে পড়ার মত। সেবার সাকিবের অলরাউন্ডিং নৈপুণ্যে ভারত, বারমুডা ও সাউথ আফ্রিকার সাথে জয় পায় বাংলাদেশ।

সাকিবের ২০১১ সালের বিশ্বকাপে স্বাগতিক দল হিসেবেই অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ। ততোদিনে তিনি ব্যাটিং ও বোলিং নৈপুণ্যে বিশ্ব ক্রিকেটে সুপরিচিত মুখ। ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজের নামের পাশে লাগিয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের তকমা। 

মাশরাফি ইনজুরির কারণে খেলতে না পারায়, অধিনায়কত্বের দায়িত্বও নেন তিনি। সেবার ছয় ম্যাচের তিনটিতেই জয় পায় বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ ছিল শক্তিশালী ইংল্যান্ড, নেদারল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ড। মোট ৬টি ম্যাচে সাকিবের রান ছিল ১৪২। ভারতের সাথে ৫৫ বাদে সাকিবের তেমন কোন উল্লেখযোগ্য স্কোর ছিল না এই বিশ্বকাপে। তবে ব্যাট হাতে সেবার জ্বলে না উঠলেও বল হাতে নিয়েছিলেন ৮ উইকেট। 

২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপটি ছিলো সাকিবের তৃতীয়। বৃষ্টিবাধায় সেবার অস্ট্রেলিয়ার সাথে ম্যাচটি বাতিল হয়ে যাওয়ায় গ্রুপ পর্বের ৫টি ও কোয়ার্টার ফাইনালসহ মোট ৬টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পায় বাংলাদেশ। ৬ ম্যাচে সাকিবের মোট রান ছিল ১৯৬। তবে সেবার বিশ্বকাপে প্রথম তিনটি ম্যাচেই আফগানিস্তানের সাথে ৬৩, শ্রীলঙ্কার সাথে ৪৬ ও স্কটল্যান্ডের সাথে ৫২ রানের তিনটি অনবদ্য ইনিংস খেলেন সাকিব। ২০১১ সালের মত এবারও ৮ উইকেট শিকার করেন সাকিব। নিউজিল্যান্ডের সাথে নিয়েছিলেন ৪টি উইকেট। 

২০১৯ বিশ্বকাপ যেন আশীর্বাদ হয়ে এসেছিল সাকিবের জন্য। নিজের চতুর্থ বিশ্বকাপে কোনো কিছুর কমতি রাখেননি এই তারকা। ব্যাটিংয়ে যেমন ছিলেন অসাধারণ, তেমনি বোলিং নৈপুণ্যেও বুদ করে রেখেছিলেন সারাবিশ্বকে। 

মোট ৮ ম্যাচে ব্যাট হাতে করেছিলেন ৬০৬ রান। এর মধ্যে ছিল ২টি সেঞ্চুরি ও ৫টি হাফ সেঞ্চুরি। সেঞ্চুরি দুটি ছিল শক্তিশালী ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে। সেবারের বিশ্বকাপে সাকিবের স্ট্রাইক রেট ছিল চোখে পড়ার মত। বল হাতে নিয়েছিলেন ১১ উইকেট। এর মধ্যে আফগানিস্তানের সাথে ৫ উইকেট পেয়ে একটি অসাধারণ স্পেল করেছিলেন সাকিব। দল সেমিতে উঠতে পারলে সাকিবই হয়তো হয়ে যেতে পারতেন ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট। 

এ পর্যন্ত ৪টি বিশ্বকাপের ২৯টি ম্যাচে প্রায় ৪৬ গড়ে সাকিবের মোট রান ১১৪৬। মোট শতক ছিল ২টি ও অর্ধশতক ছিল ১০টি। ৫.১২ ইকোনমি রেটে মোট উইকেট নিয়েছেন ৩৪টি। অধিনায়ক হিসেবে ৭ ম্যাচ নেতৃত্ব দিয়ে ৩টি ম্যাচে জয় নিয়ে এসেছেন। 

এবারও নেতৃত্বে সাকিব, খেলোয়াড় হিসেবে হয়েছেন আরও পাকাপোক্ত। সাকিব কি পারবেন দেশ ও নিজের জন্য আরও কিছু অর্জন যোগ করতে? সেই অপেক্ষায় রইলাম আমরা সবাই।

Link copied!