তিনি স্বর্গ থেকে আগত আশীর্বাদ, সত্যিই তিনি স্বর্গ থেকে আগত আশীর্বাদ। যা স্পর্শ করেন তা ই স্বর্ণে পরিণত করেন তিনি। বিবিসি স্পোর্টস ও স্কাই স্পোর্টস কমেন্টেটর অ্যালান পেরির করা এমন মন্তব্যই জানান দেয় রোনালদোর জাত। রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়ে নিজেকেই নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী বানিয়ে নিয়েছেন। নিজের ফুটবল ক্যারিয়ারে এমন কিছু রেকর্ড গড়েছেন যার ধারেকাছেও নেই ফুটবলের আরেক খুদে যাদুকর লিওনেল মেসি।
রিয়াল মাদ্রিদের জার্সি গায়ে টানা ৬ মৌসুম ন্যূনতম ৫০ গোলের রেকর্ডটি গড়েছিলেন পর্তুগিজ সুপারস্টার।
২০১০-১১ থেকে ২০১৫-১৬ পর্যন্ত টানা ছয় মৌসুম রোনালদোর গোলসংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৫১, ৬০, ৫৫, ৫১, ৬১ এবং ৫১। এই রেকর্ডে পর্তুগাল অধিনায়কের ধারে কাছে কেউ নেই।
চ্যাম্পিয়নস লীগের ৭ মৌসুমে ন্যূনতম ১০ গোল
চ্যাম্পিয়নস লীগের একমাত্র খেলোয়াড় ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, যিনি ইউরোপের ক্লাব ফুটবলের সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতার ৭ মৌসুমে ন্যূনতম ১০টি করে গোল করেন। ২০১১-১২ থেকে ২০১৭-১৮ মৌসুম পর্যন্ত নিজে রেকর্ড গড়ে রিয়াল মাদ্রিদকে চারটি চ্যাম্পিয়নস লীগ ট্রফি জেতান পাঁচ বারের ব্যালন ডি’অর পুরস্কারের মালিক। চ্যাম্পিয়নস লীগ ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতাও রোনালদো, ১৪০ গোল তাঁর। অন্যদিকে লিওনেল মেসির ইউসিএল গোলসংখ্যা ১২৯টি।
সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক গোল
২০০৩ সালে পর্তুগালের জার্সিতে আন্তর্জাতিক ফুটবলে অভিষেক হয় ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর। এখন পর্যন্ত পর্তুগিজদের হয়ে ২০০টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। গোল করেছেন ১২৩টি। যা আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড। ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল থেকে এখনই অবসরের চিন্তা করছেন না ৩৮ বছর বয়সী রোনালদো। অর্থাৎ, সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডটি আরও সমৃদ্ধ করার সুযোগ রয়েছে তার। রোনালদোর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী লিওনেল মেসি আর্জেন্টিনার হয়ে ১৭৫টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে ১০৩ গোল নিয়ে তালিকার তিনে রয়েছেন।
টানা ৪ পঞ্জিকাবর্ষে ন্যূনতম ৬০ গোল
ফুটবল ইতিহাসের একমাত্র খেলোয়াড় ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, যিনি টানা ৪ ‘ক্যালেন্ডার ইয়ার’-এ ন্যূনতম ৬০টি করে গোল করেছেন। ২০১১ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে এই কীর্তি গড়েন তিনি। এই চার বছরে রোনালদো গোল করেন যথাক্রমে ৬০, ৬৩, ৬৯ ও ৬১। পর্তুগাল অধিনায়কের এই অনন্য কীর্তিতে ছেদ পড়ে ২০১৫ সালে। সে বছর মাত্র ৫ গোলের জন্য ৬০’র কোঠা ছুঁতে পারেননি রোনালদো। এই রেকর্ডে রোনালদোর ধারে কাছে না থাকলেও এক ক্যালেন্ডার ইয়ারে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড লিওনেল মেসির। ২০১২ সালে আর্জেন্টিনা ও বার্সেলোনার হয়ে ৯১ গোল করেছিলেন মেসি।
দুই ক্লাবের হয়ে সব শিরোপা জয়
ফুটবল ইতিহাসের একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে ভিন্ন দুটি ক্লাবের হয়ে সব শিরোপা জেতার কীর্তি রয়েছে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এবং রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ঘরোয়া লীগ, ঘরোয়া কাপ, ডমেস্টিক সুপার কাপ, উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লীগ এবং ক্লাব বিশ্বকাপ জিতেছেন রোনালদো।
এছাড়াও এই দুই ক্লাবের হয়ে বিশেষ একটি কীর্তি রয়েছে রোনালদোর। ম্যানইউ-রিয়াল উভয় ক্লাবের খেলার সময় একই মৌসুমে ‘প্লেয়ার অব দ্য ইয়ার, গোল্ডেন বুট এবং ব্যালন ডি’অর পুরস্কার জিতেছেন তিনি।
যেখানে পর্তুগিজ মহাতারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো যোজন যোজন এগিয়ে তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী লিওনেল মেসির চেয়ে। সেটি হচ্ছে জনপ্রিয়তায়।
ফুটবলার হিসেবে তো বটেই, ফ্যাশন আর ব্যক্তিত্বে এলএম টেনের চেয়ে অনেকটুকু এগিয়ে সিআর সেভেন। তার
প্রমাণ মেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুজনের পদচারণায়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইন্সটাগ্রামে যেমন সিআর-সেভেন এমন একটি রেকর্ড গড়েছেন, যার ধারে কাছেও নেই এলএম-টেন। ফুটবলারদের মধ্যে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে রোনালদোর ফলোয়ার সংখ্যা ৬০০ মিলিয়ন! অর্থাৎ ৬০ কোটি।
ইন্সটাগ্রামে এত ফলোয়ার নেই আর কারো। ফুটবল মাঠে তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী লিওনেল মেসির ইন্সটাগ্রাম ফলোয়ার ৪৮২ মিলিয়ন। অর্থাৎ রোনালদোর চেয়ে বিশ্বব্যাপী তার ভক্তের সংখ্যা প্রায় ১১৮ মিলিয়ন কম!
তাদের কাছাকাছি থাকা ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমারের ইন্সটাগ্রাম ফলোয়ার ২১১ মিলিয়ন।
এছাড়া ফলোয়ার সংখ্যায় ১০০ মিলিয়নের গন্ডি পার হতে পেরেছেন কেবল ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে।