জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়ার তৃতীয় দিনে পদ্মা সেতুতে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে মাওয়া টোল প্লাজায় আসামাত্র টোল পরিশোধ করে যানবাহন নিয়ে সেতু দিয়ে পদ্মা নদী পাড়ি দিচ্ছেন লোকজন। তবে সেতুতে মোটরসাইকেল পারাপার নিষিদ্ধ থাকায় এবং ফেরি না চলায় বিপাকে পড়েছেন মোটরসাইকেল আরোহীরা।
বাইকাররা দাবি করেন, নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে তারা জানতেন না। না জেনে বাইক নিয়ে এসে আটকা পড়েছেন। এ সময় অনেককেই পিকআপ ভ্যানে করে বাইক নিয়ে যেতে দেখা গেছে। সেতু পারে বাইকের উপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। কথা হলে তারা জানান, বাইক নিয়ে সেতু পার হতে পারছেন না তারা। কিন্তু ওপারে যেতেই হবে। এজন্য পিকআপ ভ্যানের আশ্রয় নিয়েছেন।
সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত মাওয়া টোল প্লাজা এলাকায় দেখা যায়, বাস, প্রাইভেট কার, ট্রাকসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন টোল প্লাজার সামনে আসছে। কোনো রকম অপেক্ষা ছাড়া এসব যানবাহন টোল পরিশোধ করে সেতুতে উঠে জাজিরার উদ্দেশে রওনা করছে। ভোগান্তি ছাড়াই সেতুতে উঠতে পারায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রী ও চালকেরা। খুলনার বটিয়াঘাটা এলাকার ব্যক্তিগত গাড়ির যাত্রী সাকিব আহমেদ বলেন, ‘আগে ফেরিঘাটে গেলে ফেরির জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হতো। এখন অল্প সময়ের মধ্যে টোল পরিশোধ করেছি। কয়েক মিনিটের মধ্যে পদ্মা পাড়ি দিয়ে ওই পারে চলে যাব।’
ট্রাকচালক আবদুল জব্বার বলেন, গত বছর এ সময় ঘাটে এসে পদ্মা পারি দিতে এক সপ্তাহ পর্যন্ত ঘাটে বসে থাকতে হয়েছে। তারপর ফেরিতে ওঠার সুযোগ পান। এখন তো অল্প কিছু সময়ের মধ্যে পদ্মা সেতু পাড়ি দিতে পারছেন। ঢাকা থেকে একটি ট্রিপ নিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের যেকোনো জেলায় গেলে এক দিনের মধ্যেই সে টিপ খালাস করে আবার ঢাকায় ফিরতে পারছেন।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন বলেন, সকাল থেকে খুব স্বাভাবিকভাবে যানবাহন চলাচল করছে। সেতুর মাওয়া প্রান্তে কোনো চাপ নেই। মোটরসাইকেল পারাপার বন্ধ রয়েছে। সেতুতে না নামা, ছবি তোলা—এসব বিষয়ে মাইকিং করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর পাশাপাশি সেতু কর্তৃপক্ষের টহল দল সেতুতে টহল দিচ্ছে। গত দুই দিনে শুধু মাওয়া প্রান্ত দিয়ে সাড়ে ১৫ হাজার যানবাহন থেকে প্রায় ২ কোটি ৫ হাজার ৩০০ টাকা টোল আদায় করা হয়েছে।