টুইটারের দাম নিয়ে কয়েক বার ‘মুলামুলি’ করেছিলেন মাস্ক

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

অক্টোবর ৬, ২০২২, ০৯:৪৬ পিএম

টুইটারের দাম নিয়ে কয়েক বার ‘মুলামুলি’ করেছিলেন মাস্ক

টুইটার কেনা নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। সমঝোতার টেবিল থেকে ইলন মাস্কের উঠে যাওয়ার বিষয়টি যখন আদালতে ফয়সালা হওয়ার কথা, তার কয়েক সপ্তাহ আগেই হয়ে গেছে ‘মুলামুলি’র ওই ঘটনা।

ইলন মাস্কের ‘টুইটার ডিল’ ফের পুরোনো হিসাবে ফিরেছে— এ খবর এখন পুরানো। নতুন খবর হলো, এরই মধ্যে মাস্কের লোকজন একাধিকবার দরকষাকষি করে টুইটারের দাম কমানোর চেষ্টা চালিয়েছেন।

অন্তত তিনটি সূত্রের বরাত দিয়ে মার্কিন দৈনিক নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছে, ইলন মাস্ক অন্তত ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ডিসকাউন্টের আবদার করেছিলেন। সেটি সম্ভব হলে টুইটারের দাম প্রায় সাড়ে ৪৪ বিলিয়ন ডলার থেকে নেমে আসত ৩১ বিলিয়ন বা তিন হাজার একশ কোটি ডলারে। লেনদেনের ওই আলাপ গোপনীয় হওয়ায় তথ্যদাতারা নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করতে রাজী হননি। জানিয়েছে মার্কিন দৈনিকটি।

মাস্কের সাম্প্রতিক ঘোষণার ঠিক আগের সপ্তাহেই ওই চেষ্টা শতকরা ১০ ভাগ কমানোর আবদারে এসে দাঁড়ায়। তাতে টুইটারের দাম গিয়ে ঠেকতো তিন হাজার নয়শ ৬০ কোটি ডলারে। সে প্রস্তাবেও রাজী হয়নি টুইটার। সে সময় শেয়ার বাজার অনুসারে কোম্পানির দাম ছিল তিন হাজার নয়শ ২০ কোটি ডলার।

টুইটার কেনা নিয়ে সমঝোতার টেবিল থেকে মাস্কের উঠে যাওয়ার বিষয়টি যখন আদালতের ফয়সালায় যাওয়ার কথা, তার কয়েক সপ্তাহ আগেই হয়ে গেছে ‘মুলামুলি’র ওই ঘটনা।

শেয়ার প্রতি ৫৪ ডলার ২০ সেন্ট দামের প্রস্তাব দিয়ে এপ্রিল মাসে টুইটার কিনে নেওয়ার সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেন মাস্ক। বট বা স্প্যাম অ্যাকাউন্টের সংখ্যা নিয়ে টুইটার সঠিক তথ্য দিচ্ছে না— এমন অজুহাতে জুলাই মাসে সে চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছেন তিনি।

সে সময়ে বাজার বিশ্লেষকদের একাংশের ধারণা ছিল, সম্ভবত দাম কমানোর চেষ্টা হিসেবেই অমন মুলামুলি করছেন মাস্ক।

এ অবস্থায় আদালতের দ্বারস্থ হয় টুইটার, যদিও বিচারকাজ এখনও শুরু হয়নি। আর এরই মধ্যে প্রমাণাদি হিসেবে জনসমক্ষে চলে এসেছে মাস্ক, জ্যাক ডরসি, পারাগ আগরাওয়ালসহ প্রযুক্তি খাতের অনেকের সাথে মেসেজে মাস্কের আলাপচারিতার তথ্যগুলো।

ব্যক্তিগত আলাপচারিতা জনসমক্ষে চলে আসায় সম্ভবত বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পরেছেন মাস্ক এবং মেসেজে তাঁর সাথে আলাপচারিতায় অংশগ্রহণকারীরাও। অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল টুইটারের ভবিষ্যত নিয়েও।

“যাই হোক,” টাইমস লিখেছে, “শেষ পর্যন্ত ঐক্যমতে পৌঁছানোয় মাস্ক এবং টুইটার উভয়েই এক প্রকাশ্য নোংরা আইনী লড়াই থেকে রেহাই পেয়েছে।”

সোমবার টুইটারকে এক চিঠিতে পূর্বনির্ধারিত মূল্যেই টুইটার কেনার পক্ষে অবস্থান পরিষ্কার করেন মাস্ক।

টেসলা এবং স্পেসএক্স প্রধান বলেন, অধিগ্রহণটি এখনও নির্ভর করছে এপ্রিলে সমঝোতা স্বাক্ষরের সময় যে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তাদের কথা রাখার ওপর। ওই সমঝোতায় টুইটারের শেয়ার প্রতি মূল্য ৫৪.২০ ডলার ধরে হিসাব করা হয়।

যদি ব্যাংকগুলো তাদের তহবিলের প্রতিশ্রুতি না রাখে, তবে মাস্ককে ১০০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ ফি দিতে হবে। এসব তথ্য যোগ করার পাশাপাশি তিনি টুইটারকে তাঁর বিরুদ্ধে করা মামলার কার্যক্রম থামাতেও বলেছেন। এর জবাবে ফিরতি চিঠিতে টুইটার লিখেছে, “কোম্পানির চাওয়া হচ্ছে শেয়ার প্রতি ৫৪.২০ ডলারে চুক্তি সম্পন্ন করা।”

ইলন মাস্কের টুইটার কেনা নিশ্চিত করতে সামাজিক মাধ্যম কোম্পানিটি কয়েকটি উপায় বিবেচনা করছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে টাইমস। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আদালতের তত্ত্বাবধানে চুক্তি স্বাক্ষর সম্পন্ন করা যাতে করে মাস্ক আর কোনো গড়িমসি করতে না পারেন। এর পাশাপাশি সময় ক্ষেপণের ক্ষতিপূরণ হিসেবে মূল দামের ওপর সুদের হার যোগ করার বিষয়ও তুলেছে টুইটার।

আরও পড়তে পারেন

টুইটার কিনছেনই ইলন মাস্ক, সেই আগের দামেই!

Link copied!