কারফিউ ভেঙে শ্রীলঙ্কায় সরকারবিরোধী তুমুল বিক্ষোভ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

এপ্রিল ৪, ২০২২, ১২:৩৭ এএম

কারফিউ ভেঙে শ্রীলঙ্কায় সরকারবিরোধী তুমুল বিক্ষোভ

অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্যে ধূকছে দ্বীপদেশ শ্রীলঙ্কা। দেশটিতে গণবিক্ষোভ সহিংস রূপ নিয়েছে। এ অবস্থায় সরকার টানা ৩৬ ঘণ্টার কারফিউ জারি করেছে। সেই কারফিউ উপেক্ষা করে সরকারবিরোধীদের বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। আজ রবিবারও বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে রাস্তায় অবস্থান করছেন সেনাসদস্যরাও। 

১৯৪৮ সালে স্বাধীন হওয়ার পর ৭৪ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংকট পার করছে শ্রীলঙ্কা। সংকট মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতার প্রতিবাদ জানিয়ে গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয় প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন কয়েক শ মানুষ। বিক্ষোভ ঠেকাতে শুক্রবার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। এক দিন পর শনিবার দেশব্যাপী টানা ৩৬ ঘণ্টার কারফিউ জারি করেন তিনি।

Crisis-hit Sri Lanka imposes curfew, social media blackout amid calls for  mass protests | Top Points - World News

এ জরুরি অবস্থা ও কারফিউর মধ্যেই বিক্ষোভ করতে রবিবার রাস্তায় নেমে আসেন বিরোধী দলের শতাধিক আইনপ্রণেতা। তাঁরা বিরোধীদলীয় নেতা সাজিথ প্রেমাদাসার বাড়ির সামনে থেকে মিছিল নিয়ে রাজধানীর ইনডিপেনডেন্স স্কয়ার অভিমুখে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় সেনা সদস্যরা তাঁদের থামিয়ে দেন।

এসজেবির আইনপ্রণেতা হর্ষ দে সিলভা এএফপিকে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষের বরং বোঝা উচিত, তাঁর কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে জনগণ ক্ষুব্ধ।’

ফেলো এসজেবি আইনপ্রণেতা ইরান বিক্রমারত্নে বলেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সামরিক আইন জারির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ‘আমরা সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা দখল করতে দিতে পারি না। তাদের জানা উচিত, আমরা এখনো একটি গণতান্ত্রিক দেশ,’ বলেন ইরান বিক্রমারত্নে।

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানী কলম্বোর বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় বিপুল সেনা উপস্থিতি দেখা গেছে। কিছু ছবিতে দেখা গেছে, ইনডিপেনডেন্স স্কয়ারে বিক্ষোভকারীদের যেতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।

Sri Lanka declares state of emergency as protests spread | Protests News |  Al Jazeera

গতকাল শ্রীলঙ্কার টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক কমিশন বলেছে, রবিবার থেকে ফেসবুক, মেসেঞ্জার, ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার, টুইটার, আইএমও, ইনস্টাগ্রাম, টেলিগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাট ও টিকটক বন্ধ থাকবে। তারা আরও জানিয়েছে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ ঘোষণার আগে অজ্ঞাতপরিচয়ের বিক্ষোভকারীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিলেন।

শ্রীলঙ্কার বেসরকারি সংবাদমাধ্যমের বরাতে এএফপি জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ ঘোষণার পর দেশটির ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান পদত্যাগ করেছেন।

২ কোটি ২০ লাখ অধিবাসীর দেশ শ্রীলঙ্কা প্রচণ্ড অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্যে আছে। বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি থাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য আমদানিরও ক্ষমতা হারিয়েছে দেশটি। বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, রাজাপক্ষে সরকারের পরিবার তন্ত্র, দুর্নীতি ও লাগামহীন অর্থ পাচারের মাশুল গুনছে দেশ। 

সূত্র: এএফপি

Link copied!