বিচারক কামরুন্নাহারকে প্রত্যাহার করে প্রজ্ঞাপন জারি

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেম্বর ১৫, ২০২১, ০২:১৮ এএম

বিচারক কামরুন্নাহারকে প্রত্যাহার করে প্রজ্ঞাপন জারি

রাজধানীর বনানীতে রেইনট্রি হোটেলে চার বছর আগে দু’জন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ মামলার রায়ে ধর্ষণের ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলে পুলিশকে মামলা না নেওয়ার পর্যবেক্ষণ দেওয়ায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক মোছা. কামরুন্নাহারকে প্রত্যাহার করে আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে।

রবিবার (১৪ নভেম্বর) আইন, বিচার ও সংসদ-বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

আইনমন্ত্রণালয়ের উপ সচিব (প্রশাসন-১) শেখ গোলাম মাহবুবের সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭, ঢাকা এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) বেগম মোছা. কামরুন্নাহারকে বর্তমান কর্মস্থল হতে প্রত্যাহারপূর্বক আইন ও বিচার বিভাগের সংযুক্ত করা হলো। জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো।’

এর আগে রবিবার সকালে ওই বিচারককে আদালতে না বসার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি। সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনা করে রবিবার (১৪ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি এ নির্দেশ দেন।

এছাড়া সেই বিচারকের বিচারিক ক্ষমতা সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করে তাকে বর্তমান কর্মস্থল থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চিঠি পাঠায় সুপ্রিম কোর্ট।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক বেগম মোছা. কামরুন্নাহারের আদালত রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণ মামলা থেকে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদসহ ৫ আসামিকে খালাস দেন।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক আরও বলেন, মামলার দুই ভিকটিম আগে থেকেই সেক্সুয়াল কাজে অভ্যস্ত। তারা স্বেচ্ছায় হোটেলে গিয়েছেন। সেখানে গিয়ে সুইমিং করেছেন। ঘটনার ৩৮ দিন পর তারা বললেন, ‘আমরা ধর্ষণের শিকার হয়েছি’। অহেতুক তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রভাবিত হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছেন। এতে আদালতের ৯৪ কার্যদিবস নষ্ট হয়েছে। এরপর থেকে পুলিশকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছি। এ ছাড়া এরপর থেকে ধর্ষণের ৭২ ঘণ্টা পর যদি কেউ মামলা করতে যায়- তা না নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।

এর পরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। আইনজীবী, নারী অধিকারকর্মী, সমাজবিজ্ঞানী, অপরাধবিজ্ঞানীসহ সচেতন মহলও এই মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে সন্তুষ্ট হতে পারেননি।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়ে অস্ত্রের মুখে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ৬ মে বনানী থানায় পাঁচজনের নামে মামলা হয়।

Link copied!