সামরিক হামলার মধ্যেও ইউক্রেন ও রাশিয়া কর্তৃপক্ষ যুদ্ধ বন্ধে সমঝোতায় আসার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে শান্তি আলোচনা সফল করতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদমির জেলেনস্কি ছয়টি বিষয়কে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছেন। দেশকে সুরক্ষিত করতে নিশ্চয়তাও চেয়েছেন ইউক্রেনিয় নেতা।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি’র খবরে বলা হয়, স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার দেওয়া ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, ‘রাশিয়া সন্ত্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে বলে বিশ্বকে অবশ্যই আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিতে হবে। তিনি রাশিয়ার ওপর আরও অবরোধ আরোপ, ইউক্রেনকে আরও অস্ত্র সহায়তা এবং নো-ফ্লাই জোন বাস্তবায়নে তার আহ্বানও পুনর্ব্যক্ত করেন।
আরও পড়তে পারেন: রুশ হামলায় চেরনিহিভে এক দিনেই ৫৩ জন নিহত
রাশিয়ার সঙ্গে যেকোনো ধরনের সংলাপ সফল হওয়ার জন্য দেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করা পূর্বশর্ত উল্লেখ করে ইউক্রেনিয় প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘শান্তি আলোচনায় আমার অগ্রাধিকার বিষয়গুলো সুস্পষ্ট। অগ্রাধিকার বিষয়গুলো হলো- ১. যুদ্ধের অবসান, ২. নিরাপত্তার নিশ্চয়তা, ৩. সার্বভৌমত্ব, ৪. ইউক্রেনের ভূখণ্ডগত অখণ্ডতা অক্ষুণ্ন রাখা, ৫. আমাদের দেশের জন্য প্রকৃত নিশ্চয়তা এবং ৬. আমাদের দেশের প্রকৃত সুরক্ষা।’
ওই ভাষণে জেলেনস্কি দাবি করেন, সিরিয়া, চেচনিয়া ও আফগান যুদ্ধের চেয়েও বেশি রুশ সেনা হতাহত হয়েছেন ইউক্রেনে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, ইউক্রেনে চলমান সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত সাত হাজারের বেশি রুশ সেনা নিহত হয়েছেন। তবে কিয়েভের দাবি, রুশ সৈন্য হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা ওই সংখ্যার দ্বিগুণের বেশি।
আফগান যুদ্ধে (১৯৭৯-৮৯) প্রায় ১৫ হাজার সোভিয়েত সেনা মারা যায়। চেচনিয়ার যুদ্ধে নিহত হয় কমপক্ষে ১৩ হাজার রুশ সেনা। অন্যদিকে, সিরিয়ায় নিহত রুশ সেনার সংখ্যা কয়েক শ হতে পারে বলে বিবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভিযান শুরুর পর রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধি দল বেশ কয়েক দফা বৈঠকে বসেছেন, তবে যুদ্ধবিরতি ছাড়া তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য সফলতা আসেনি। শান্তি আলোচনায় ইউক্রেনের ন্যাটোর সদস্য না হওয়া, ক্রিমিয়াকে রুশ ভূখণ্ড এবং দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির শর্ত জুড়ে দিয়েছে পুতিন সরকার। তবে ইউক্রেনিয় সরকার ওই সব শর্ত প্রত্যাখ্যান করেছে।