আগস্ট ২১, ২০২৪, ০৬:০৬ এএম
সরকারি চাকরিতে কোটা বৈষম্যের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে আলোকচিত্রী তাহির জামান প্রিয়র মৃত্যুর ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ৭ জনকে আসামি করে মামলা নিয়েছে পুলিশ। অভিযোগ উঠেছে, ১২ ঘণ্টা অপেক্ষায় বসিয়ে রেখে এই মামলা গ্রহণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) রাত ১২টার পর রাজধানীর নিউমার্কেট থানায় এই মামলা নেওয়া হয়। এর আগে ছেলেকে হত্যার অভিযোগে মামলা দায়েরের জন্য একই দিন সকাল থেকে ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় থানায় অপেক্ষা করেন তাহির জামানের মা সামসি আরা জামান।
মা সামসি আরা জামানের দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া অন্যান্য আসামি হলেন- আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ-আল মামুন, রমনা জোনের সাবেক ডিসি মোহাম্মদ আশরাফ ইমাম, রমনা জোনের সাবেক এডিসি হাফিজ আল-আসাদ, নিউমার্কেট থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম ও নিউমার্কেট জোনের সহকারী কমিশনার রেফাতুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: তাহির জামান প্রিয়: এক স্বপ্নবাজ তরুণের অকাল মৃত্যু
কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে ১৯ জুলাই রাজধানীর গ্রিন রোডে গুলিবিদ্ধ হয়ে আলোকচিত্রী তাহির জামানের। তরুণ এই আলোকচিত্রী সর্বশেষ দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের ভিডিও জার্নালিস্ট হিসেবে কাজ করেছেন। এরপর তিনি ফ্রিল্যান্স জার্নালিস্ট হিসেবে কাজ করতেন।
তাহির জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সহ গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার ছবি সংগ্রহ করেছেন দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের জন্য। এছাড়াও গত বছরের ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশ চলাকালীন সময়ে আহত হন তাহির।
জানা যায়, তাহির জামান মা সামসি আরা হত্যা মামলা দায়েরের জন্য গতকাল মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে নিউমার্কেট থানায় যান। তারা শুরু থেকেই মামলা না নেওয়ার জন্য গড়িমসি করতে থাকেন। থানা থেকে জানানো হয়, মামলা গ্রহণের জন্য কোনও কর্মকর্তা নেই। এ ছাড়া থানা পুলিশ বিভিন্ন হয়রানি করেছে এমন দাবিও করেছেন তাহির জামানের মা সামসি আরা।
এদিকে সাতমসজিদ সড়কে গাছ রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক আমিরুল রাজীব সকাল থেকেই তাহির জামানের মায়ের সঙ্গেই ছিলেন। এ ছাড়া জামানের বোন তাসফিয়া আলম ও অর্ধশতাধিক ছাত্র-জনতাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় রাজীব ডিএমপির নিউমার্কেট জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার রেফাতুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে জানান, থানায় আসার পর থেকেই মামলা গ্রহণে গড়িমসি করেছে পুলিশ সদস্যরা। থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ পরিদর্শককেও (তদন্ত) কৌশলে থানা থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এমনকি বিভিন্ন জনকে দিয়ে ফোন করে নানাভাবে হুমকিও দেয়া হয়েছে বলেও দাবি করেছেন রাজীব।
পরে সেখানে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার ইসরাইল হাওলাদার গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন ও সবাইকে মামলা গ্রহণের আশ্বাস দিয়ে জানান, থানায় মামলা রুজুর জন্য যে পুলিশ কর্মকর্তা প্রয়োজন, তা এখন এই মুহূর্তে নেই। মামলা রুজু করা হবে। পাশাপাশি সহকারী পুলিশ কমিশনার রেফাতুল ইসলামের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সবশেষ রাত ১২টা ৫ মিনিটে মামলার আবেদন এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে নিউমার্কেট থানা পুলিশ।