সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৫, ০৪:৩৯ পিএম
রূপপুর গ্রিনসিটি প্রকল্পে (২০১৯ সালে নির্মাণাধীন) আসবাবপত্র ও অন্যান্য সামগ্রী কেনা এবং ভবনে সেগুলো ওঠানোর কাজে ‘অস্বাভাবিক ব্যয়ের’ ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দুই উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে গুরুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে একজনকে বাধ্যতামূলক অবসর এবং অপরজনকে নিম্ন বেতন গ্রেডে অবনমনের শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মো. শাহীন উদ্দিনকে বাধ্যতামূলক অবসর এবং একই পদে কর্মরত মো. আলমগীর হোসেনকে নিম্ন বেতন গ্রেডে অবনমিত করা হয়েছে।
তদন্তে দেখা গেছে, পাবনা গণপূর্ত উপবিভাগে দায়িত্ব পালনের সময় শাহীন উদ্দিন এবং রাজশাহী গণপূর্ত জোনে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় আলমগীর হোসেন আসবাবপত্র কেনা ও তা ভবনে ওঠানোর কাজে অস্বাভাবিক ব্যয়ের প্রাক্কলন করেন।
এ অভিযোগে ২০১৯ সালের মে মাসে গণপূর্ত অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয় পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। উভয় কমিটির প্রতিবেদনে অভিযোগের সত্যতা মেলে।
তদন্তে বলা হয়, দুই প্রকৌশলী দায়িত্ব পালনে অবহেলা করে অসদাচরণের শামিল হয়েছেন। বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ অনুসারে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়। পরবর্তীতে সরকারি কর্ম কমিশনের পরামর্শক্রমে এবং রাষ্ট্রপতির আদেশে গত ৪ সেপ্টেম্বর সচিব মো. নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পৃথক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাঁদের বিরুদ্ধে এ শাস্তি কার্যকর করা হয়।
২০১৯ সালে গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, রূপপুর আবাসিক ভবনের জন্য ১৬৯ কোটি টাকার কেনাকাটায় ব্যাপক অনিয়ম হয়। প্যাকেজ বিভাজনের মাধ্যমে অনুমোদন এড়িয়ে কেনাকাটায় বালিশপ্রতি দাম দেখানো হয়েছিল ৫ হাজার ৯৫৭ টাকা এবং প্রতিটি বালিশ খাটে তুলতে ব্যয় দেখানো হয় ৭৬০ টাকা। একইভাবে কমফোর্টারের দাম ধরা হয় ১৬ হাজার ৮০০ টাকা, যা বাজারমূল্যের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি।
ঘটনাটি প্রকাশের পর দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয় এবং ওই বছরের ডিসেম্বর মাসে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুল আলমসহ ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন গণপূর্ত অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার।