ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী জালাল আহমদকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রাজধানীর শাহবাগ থানায় দায়ের করা হত্যা চেষ্টা মামলায় আজ বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমান তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে জালালকে আদালতে হাজির করে শাহবাগ থানা-পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার এসআই মো. আসাদুল ইসলাম বুধবার তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। অন্যদিকে জালালের পক্ষে জামিনের আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত গ্রামীনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আদালতের শাহবাগ থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই জিন্নাত আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ঢাবির টেলিভিশন অ্যান্ড ফিল্ম বিভাগের ২০১৮-২০১৯ সেশনের শিক্ষার্থী জালাল। তিনি হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের ৪৬২ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। মঙ্গলবার মধ্যরাতে তিনি রুমমেট মো. রবিউল হককে মারধর এবং ভাঙা টিউবলাইট দিয়ে আঘাত করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
পর জালালকে পুলিশে সোপর্দ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের প্রাধ্যক্ষ মো. সিরাজুল ইসলাম বুধবার শাহবাগ থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন।
মামলায় বলা হয়, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী রবিউল রাত ১২টার দিকে নিজের কক্ষে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে জালাল ঘরে ঢুকে বৈদ্যুতিক লাইট জ্বালান এবং চেয়ার টানা হেচড়া করে ‘বিকট’ শব্দ করতে শুরু করেন। তাতে রবিউলের ঘুম ভেঙে যায়। তিনি জালালকে বলেন, ‘ভাই সকালে আমি লাইব্রেরিতে যাব, আপনি একটু আস্তে শব্দ করেন।’
জালাল তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে রবিউলের সঙ্গে তর্ক শুরু করেন এবং এক পর্যায়ে রবিউলকে ‘হত্যা করার উদ্দেশ্যে’ কাঠের চেয়ার দিয়ে মাথা লক্ষ্য করে বাড়ি মারেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
এজাহারে আরও বলা হয়, রবিউল হাত দিয়ে কাঠের চেয়ারের আঘাত প্রতিহত করলেও চেয়ারের কাঠের আঘাত তার কপালে জখম হয়। পরে জালাল ওই রুমের ভেতর থাকা পুরনো টিউবলাইট দিয়ে রবিউলকে ‘হত্যার উদ্দেশ্যে’ তার মাথা লক্ষ্য করে আঘাত করেন। রবিউল মাথা সরিয়ে নিলেও তার বুকের বাঁ পাশে আঘাত লাগে এবং টিউবলাইট ভেঙে কাটা জখম হয়। জালাল তখন ভাঙা ও ধারালো টিউব লাইট দিয়ে রবিউলকে আঘাত করলে তিনি বাঁ হাত দিয়ে প্রতিহত করেন। তাতে হাতে কেটে জখম হয়।
পরে অন্যান্য রুমের শিক্ষার্থীরা এসে আহত রবিউলকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান।
মামলার অভিযোগের বিবরণ দিয়ে জালালকে কারাগারে আটক রাখার আবেদনে বলা হয়, জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন আসামি। আসামির নাম-ঠিকানা যাচাই বাছাই প্রক্রিয়াধীন। মামলার ঘটনার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং চাঞ্চল্যকর। এমতাবস্থায় তদন্তকালীন সময়ে তাকে জামিনে মুক্তি দিলে চিরতরে পলাতক হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তদন্তের ব্যাঘাত ঘটবে। মামলার সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং আসামির নাম-ঠিকানা যাচাই না হওয়া পর্যন্ত আসামিকে জেলহাজতে আটক রাখা একান্ত প্রয়োজন।