নির্ধারিত দর মিলছে না, কোরবানির চামড়ায় লোকসানে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুন ৮, ২০২৫, ১২:৫১ পিএম

নির্ধারিত দর মিলছে না, কোরবানির চামড়ায় লোকসানে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা

চলতি ঈদুল আজহায় সরকারিভাবে কাঁচা চামড়ার দাম বাড়ানো হলেও, দেশের বিভিন্ন স্থানে ছোট ব্যবসায়ীরা এখনও লোকসানে রয়েছেন।

বাজারদর সরকারি নির্ধারিত দরের সঙ্গে সঙ্গতি না পাওয়ায় অনেকেই প্রত্যাশিত মুনাফা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

বছর ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়ার প্রতি বর্গফুট দাম নির্ধারণ করা হয় ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, যা গত বছরের তুলনায় টাকা বেশি। ঢাকার বাইরে নির্ধারিত ছিল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা।

কিন্তু বাস্তবে বড় মাঝারি গরুর প্রতিটি চামড়া বিক্রি হয়েছে ৭০০ থেকে ৯০০ টাকার মধ্যে, যা গত বছরের মতোই। ছোট বা নিম্নমানের চামড়া বিক্রি হয়েছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায়। ঢাকার বাইরের এলাকাগুলোতে এই দাম আরও কম ছিল।

ছাগলের চামড়ার প্রতি বর্গফুট দাম নির্ধারণ করা হলেও (২০২৭ টাকা), কেনাবেচায় তা কার্যত কোনো প্রভাব ফেলেনি। ক্রেতাদের আগ্রহও ছিল খুবই কম।

ট্যানারি মালিকরা জানান, বছর ৮০ থেকে ৮৫ লাখ চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

তাঁরা দাবি করছেন, গত বছরের তুলনায় কিছুটা বেশি দরে চামড়া কিনেছেন। তবে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বলছেন, তাঁরা ন্যায্যমূল্য পাননি, বরং অনেকেই গত বছরের তুলনায় কম দামে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন।

সরকারি দরের ভিত্তিতে মাঝারি আকারের (২১৩০ বর্গফুট) গরুর প্রতিটি চামড়ার দাম হওয়ার কথা ছিল ,৫০০ থেকে ,৬২৫ টাকা। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।

বড় সমস্যা হিসেবে আড়তদারদের পক্ষপাতমূলক কেনার পদ্ধতিকে দায়ী করছেন অনেকে। তারা ২০৩০ শতাংশ পর্যন্ত দাম কেটে রাখেন বা ২০ বর্গফুটের কম আকারের চামড়া নিতেই চান না। ফলে অনেক ছোট ব্যবসায়ী ন্যায্যমূল্য তো পানই না, বরং লোকসানে পড়েন।

অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের চামড়া চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি বাড়ছে। ২০২৪২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত সময়ে .০৬ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১২.% বেশি।

তবে এই রপ্তানি প্রবৃদ্ধি স্থানীয় বাজারে তেমন ইতিবাচক প্রভাব ফেলেনি। ঈদের দিনের শুরুতে কিছুটা ভালো দামে (প্রতি চামড়া ১০০১৫০ টাকা বেশি) বিক্রি হলেও দুপুরের পর দাম দ্রুত পড়ে যায়।

২০১৩ সালে সর্বোচ্চ চামড়ার দাম ছিল ৮৫৯০ টাকা প্রতি বর্গফুট। এরপর ধারাবাহিকভাবে দাম কমতে থাকে।

২০১৯ সালে বড় ধরনের দরপতনের কারণে বহু চামড়া রাস্তায় ফেলে দেওয়া বা মাটিতে পুঁতে ফেলার ঘটনা ঘটে, যার ফলে প্রায় ২৪২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়।

সরকারি হস্তক্ষেপে সে ধরনের ঘটনা আর না ঘটলেও, নির্ধারিত দরের নিচেই এখনও চামড়া বিক্রি হচ্ছে। ফলে অনেক মৌসুমি ব্যবসায়ীর জন্য বছরও কোরবানির চামড়া থেকে লোকসান ছাড়া আর কিছু মেলেনিপ্রতিশ্রুত উন্নতির আশ্বাস সত্ত্বেও

Link copied!