বনভোজনের আড়ালে শিশুদের শিবিরের রাজনীতিতে টানার চেষ্টা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মার্চ ৯, ২০২২, ০১:৫৬ পিএম

বনভোজনের আড়ালে শিশুদের শিবিরের রাজনীতিতে টানার চেষ্টা

শিশু-কিশোরদের রাজনৈতিকভাবে দলে টানতে বনভোজনের নামে নির্জন পার্কে নিয়ে তালিম দেওয়ার চেষ্টা চলছিল বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ১৫০ শিশু-কিশোরকে উদ্ধার করেছে। গ্রেপ্তার করেছে ৫৩ তরুণকে। এ সময় দুটি বাস থেকে পুলিশ জিহাদি লিফলেট, কলম, বই, হ্যান্ডনোট ও ২৬০টি টি–শার্ট জব্দ করে। কলমে ‘বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির’–এর নাম লেখা আছে। গোলাম আযমের লেখা বইও আছে।

পুলিশ বলছে, গত রবিবার রাজশাহীর তানোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলের দুটি পার্কে কথিত বনভোজনের আয়োজন করা হয়েছিল। জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা শিশুদের নির্জন পার্ক দুটিতে নিয়ে গিয়েছিলেন। উদ্ধার হওয়া শিশুদের পরে অভিভাবকদের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। আর ৫৩ তরুণকে নাশকতার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সোমবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

জানতে চাইলে জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক মাজেদুর রহমান বলেন, ছোট বাচ্চাদের নিয়ে একটা বনভোজনে গিয়েছিলেন। সেখানে তাদের কয়েকজন ছেলে ছিল।

রাজশাহীর ‘ইউনিটেক কোচিং সেন্টার’ থেকে বনভোজনের নামে শিশু-কিশোরদের তানোর ও নাচোলের দুটি নির্জন পার্কে নেওয়া হয়েছিল। রবিবার কথিত বনভোজন চলার সময় পুলিশ ওই তরুণদের গ্রেপ্তার করে। আর সোমবার ভোরের দিকে শিশু-কিশোরদের তাদের অভিভাবকের জিম্মায় দেওয়া হয়।

তানোরের পার্কটির নাম ‘নাইস গার্ডেন’। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র জানায়, এর আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি এই পার্কে জামায়াতে ইসলামীর ২০০ নেতার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছে। তাদের সাংগঠনিক কাজে প্রায়ই তারা এই নির্জন পার্ক ব্যবহার করেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলের ‘স্বপ্নপল্লী’ নামে পার্কটিও একই কাজে ব্যবহার করা হয়। এই পার্কের অবস্থান আরও নির্জন এলাকায়। ২০১৯ সালের ২৮ অক্টোবর এই পার্কে নাশকতার বৈঠকে অভিযান চালিয়ে জামায়াত-শিবিরের ব্যানার ও রান্না করা খাবার জব্দ করেছিল পুলিশ।

নাইস গার্ডেনের ব্যবস্থাপক মো. রেন্টু বলেন, ইউনিটেক কোচিং সেন্টারের দুজন শিক্ষার্থী পরিচয়ে ৬ মার্চের জন্য তাদের পার্কটি বুকিং দিয়েছিলেন। ঘটনার দিন রোববার সকাল সাতটায় তাদের বাবুর্চি এসে রান্না শুরু করেন। পরে তাদের বাস আসে। কিছুক্ষণ পর তারা নাচোলে স্বপ্নপল্লীতে চলে যান। ফিরে এসে খাওয়ার কথা ছিল। পরে আর আসেননি।

এ ব্যাপারে নাচোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিন্টু রহমান বলেন, কোচিংয়ের নামে শিশুদের শিবির নেতারা এসব পার্কে এনে ‘মগজ ধোলাই’ করেন। সেখানে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীও ছিল। এসব শিশু-কিশোরের পরিবার অসচ্ছল। এ সুযোগ তারা নিয়ে থাকেন। দুই বাসের সঙ্গে মোটরসাইকেলে আরও অনেকেই ছিলেন। তারা পালিয়ে গেছেন। বাসের ৫৩ জনকে নাশকতার পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের সোমবার বিকেলে আদালতে সোপর্দ করা হয়। আর অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪৯ শিশুকে অভিভাবকদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

ওসি আরও বলেন, অভিযানে বাস থেকে জিহাদি লিফলেট, হ্যান্ডনোট ও ২৬০টি টি–শার্ট উদ্ধার করা গেছে। আরও অনেক কিছু ছিল হয়তো। শিবিরের বড় নেতারা আগেই পালিয়েছেন।

সূত্র: প্রথম আলো

Link copied!