এপ্রিল ২৫, ২০২৩, ০২:৫৪ এএম
স্বাধীন বাংলাদেশ পেরিয়ে এসেছে তার ৫২টি বছর। এই অর্ধশতকের বেশি সময়ে রাষ্ট্রপতির দায়িত্বে এসেছেন ১৭ জন। এরমধ্যে একমাত্র রাষ্ট্রপতি হিসেবে টানা দুই মেয়াদে ১০ বছর ৪১ দিন দায়িত্বে ছিলেন সদ্য বিদায়ী রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তাঁকে দেওয়া হল রাষ্ট্রীয় সংবর্ধনা। দেশের ইতিহাসে তিনিই প্রথম রাষ্ট্রপতি যাকে রাষ্ট্রীয় বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হলো।
সোমবার (২৪ এপ্রিল) জমকালো রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদকে বিদায় জানানো হয়। বাংলাদেশের ৫২ বছরের ইতিহাসে এর আগে বঙ্গভবনে কোনো রাষ্ট্রপতির বিদায় অনুষ্ঠান হয়নি।
বিদায়ের আগে মো. আবদুল হামিদ নতুন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে দেশের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদের দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।
সাতবার আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকার প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য হন আবদুল হামিদ। ১৯৫৯ সালে তৎকালীন ছাত্রফ্রন্ট থেকে ছাত্রলীগে যোগদানের মাধ্যমে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন তিনি। ১৯৬৯ সালের শেষ দিকে যোগ দেন আওয়ামী লীগে।
১৯৭০ সালে ময়মনসিংহের একটি আসন থেকে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য নির্বাচিত হন আবদুল হামিদ। এরপর আর তাঁকে পেছনে তাকাতে হয়নি।
২০১৩ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান বিদেশে চিকিৎসাধীন থাকার সময় জাতীয় সংসদের স্পিকার হিসেবে কিছুদিন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি এবং জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর বেশ কিছুদিন অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন আবদুল হামিদ।
পরবর্তীতে ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের এই প্রবীণ রাজনীতিবিদ। ৫ বছর পর ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয় মেয়াদে দেশের ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন তিনি।
২০২৩ সালের ২৪ এপ্রিল রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব শেষ হয় তাঁর। তাঁর জায়গায় আসেন বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রবীণ রাজনীতিক মো. সাহাবুদ্দিন।
নবনিযুক্ত রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের শপথ অনুষ্ঠানের পর বিদায়ী রাষ্ট্রপতি হামিদের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) একটি সুসজ্জিত দল বঙ্গভবনের ক্রেডেনশিয়াল মাঠে বিদায়ী রাষ্ট্রপতিকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। বিদায়ী রাষ্ট্রপতি পুষ্পসজ্জিত খোলা জিপে বক ফোয়ারা থেকে বঙ্গভবনের প্রধান ফটক পর্যন্ত যান। সেখানে বিদায় অনুষ্ঠানে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর ব্যান্ড দল এবং অশ্বারোহী দল অংশ নেয় রাষ্ট্রপতি হামিদের বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতায়। বঙ্গভবনের প্রধান ফটকে তাঁকে দেওয়া হয় স্যালুট গার্ড।
গাড়ির দুই পাশে দুই দলে বিভক্ত হয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ান বঙ্গভবনের কর্মকর্তারা। বঙ্গভবনের প্রধান ফটক থেকে বাইরের গেটের ফোয়ারা পর্যন্ত খোলা জিপে ফুলের পাপড়ি ছুঁড়ে আবদুল হামিদকে বিদায় জানান তারা।
বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী এসএসএফের তত্ত্বাবধানে একটি মোটর শোভাযাত্রার মাধ্যমে তাঁকে রাজধানীর নিকুঞ্জের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরিবারকে নিয়ে এখন সেখানেই তিনি বসবাস করবেন।