ডিসেম্বর ২৮, ২০২২, ০৯:০৬ পিএম
বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেল নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন প্রভাবশালী গণমাধ্যম ব্লুমবার্গ। এতে ঢাকায় মেট্রোরেলের প্রয়োজনীয়তাসহ বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, মেট্রোরেল শেখ হাসিনা সরকারের ভাবমূর্তি বাড়াবে।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে মেট্রোরেলের উদ্বোধন করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার দুপুরে উত্তরায় এর উদ্বোধন করেন তিনি।
‘বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ শহর পেলো প্রথম মেট্রোরেল’ শিরোনামে ব্লুমবার্গ লিখেছে, ‘বাংলাদেশের রাজধানীর এখন আছে মেট্রোরেলের প্রথম লাইন। জাপানের অর্থায়নে, বিশ্বের অন্যতম জনবহুল শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করার লক্ষ্যে এটি নির্মাণ করা হয়েছে।’
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রোর একটি অংশ বুধবার উদ্বোধন করেন, যা লাইন-৬ নামে পরিচিত। এই লাইনটি ঢাকার উত্তর অংশের সঙ্গে মধ্যাংশের সরকারি অফিস ও এবং হাসপাতালগুলোর সংযোগ তৈরি করেছে। পরবর্তীতে এটি শহরের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ দিকের বাণিজ্যিক বিভাগ মতিঝিলে যাবে।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, ঢাকার মানুষের যাতায়াতের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনবে এ প্রকল্পটি। রিজার্ভ হ্রাস, মুদ্রাস্ফীতি ও জ্বালানি সংকটে থাকা বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের আগে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতেও সহায়তা করবে এটি।
বিশ্বব্যাংক বলছে, ভবিষ্যতে ঢাকার গাড়ির গতি প্রতি ঘণ্টায় গড়ে চার কিলোমিটারে নেমে আসতে পারে, যা সাধারণ মানুষের হাঁটার গতির চেয়ে কম।
ব্লমবার্গ লিখেছে, ‘৩০৫ বর্গ কিলোমিটারের শহর ঢাকায় ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষের বসবাস। ১০ বছর আগে ঢাকায় যানবাহনের গতি ছিল ঘণ্টায় ২১ কিলোমিটার। সেখান থেকে তা কমে হয়েছে ৭ কিলোমিটার। কমতে কমতে এটি ৪ কিলোমিটারে নেমে যেতে পারে। যা হাঁটার চেয়েও ধীরগতি।’
ঢাকার মেট্রোরেল নিয়ে বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়ার সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মার্টিন রমার দেওয়া একটি বক্তব্যের কথা উল্লেখ করেছে ব্লুমবার্গ।
মার্টিন রমা মেট্রোরেল নিয়ে বলেছিলেন, ‘ঢাকার মতো শহরের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এক উন্নয়ন। আপনি যদি ভারতের বিভিন্ন শহরের দিকে তাকান দেখবেন মানুষের কাজে যাওয়ার যোগাযোগ পথে অনেক পরিবর্তন এসেছে। মেট্রোরেল যোগাযোগের নিরাপদ একটি বাহন। বিশেষ করে নারীদের জন্য। দক্ষিণ এশিয়ায় যা গতানুগতিক নয়।’
তবে রমা বলেন, ‘মেট্রোরেলের কারণে ঢাকার যানজট এ মুহূর্তেই চলে যাবে এমন চিন্তা করাটা বোকামি হবে। কারণ কোনও যোগাযোগ স্থাপনা তৈরির পর রাস্তায় যানবাহন ও মানুষের যে চাপ কমে সেটি নতুন বাহনে আবারও ফিরে আসে।’