রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের অবস্থান

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেম্বর ২৪, ২০২৪, ০২:৪২ পিএম

রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের অবস্থান

১১ দফা দাবি আদায়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, যাত্রাবাড়ী, জাতীয় প্রেসক্লাবসহ বেশ কয়েকটি স্থানে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছেন রাজধানীর ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা।

ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলের দাবি জানিয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জড়ো হয়েছেন বিভিন্ন স্থান থেকে আসা রিকশাচালকরা। 

এর ফলে পল্টন, জাতীয় প্রেস ক্লাব ও হাইকোর্ট এলাকায় যানচলাচল বন্ধ হয়ে ওই রুটে চলাচল করা মানুষেরা ভোগান্তিতে পড়েছেন বলে সমকালের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। 

রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে অটোরিকশা, ভ্যান নিয়ে হাজির হতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। বিভিন্ন দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের ব্যানারে গণঅবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। 

দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত গণঅবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন রিকশাচালক শ্রমিকরা। বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী-গোষ্ঠী রিকশাচালকদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে গণসংগীত পরিবেশন করছে।

গণঅবস্থানের ফলে হাইকোর্ট থেকে কদম ফোয়ারা এবং প্রেস ক্লাব থেকে পল্টন পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন বলে বাংলা ট্রিবিউনের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। 

আন্দোলনকারীদের দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-ব্যাটারিচালিত যানবাহন বন্ধে হাইকোর্টের আদেশ প্রত্যাহার, বিআরটিএ লাইসেন্স প্রদান, দেশের সড়ক উপযোগী নকশায় আধুনিকায়নসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহনের যৌক্তিক রুট পারমিট দেওয়া, ব্যাটারিচালিত যানবাহন চলাচলে নীতিমালা প্রণয়ন, শ্রমিক প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে সড়ক ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনা কমিটি গঠন, সড়কের লেন পদ্ধতি সচল ও সার্ভিস লেন নির্মাণ।

প্রেসক্লাবের সামনে আন্দোলনে আসা চালকরা জানান, তারা কামরাঙ্গীরচর, হাজারীবাগ ও সেকশন এলাকা থেকে এসেছেন। চিটাগাং রোড এলাকা থেকেও আরও রিকশাচালক অবরোধে যোগ দিতে আসছেন।

প্রেসক্লাবের সামনে লাল ব্যানার নিয়ে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা স্লোগান দিতে দিতে জড়ো হতে থাকেন। মিছিলটি দোয়েল চত্বর, হাইকোর্ট মাজার মোড় ও কদম ফোয়ারা হয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আসে।

এ সময় তারা ‘ব্যাটারিচালিত যানবাহন বন্ধে হাইকোর্টের আদেশ প্রত্যাহার করতে হবে’ এমন স্লোগান দিতে থাকেন। অন্যপাশে দেখা যায়, মঞ্চে ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখছেন।

অন্যদিকে তাদের সমাবেশ ঘিরে প্রেস ক্লাব এলাকায় সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে।

প্রেসক্লাব এলাকা ছাড়াও রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সড়ক অবরোধ করেছেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকরা। রোববার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে তাদের এই অবরোধের ফলে মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, মিরপুর ও গাবতলী সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন এই রুটে চলাচল করা মানুষজন।

মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী ইফতেখার হাসান বলেন, হঠাৎ সকাল সাড়ে ১০টা দিকে মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ চার রাস্তার মোড় ও ঢাকা উদ্যান এলাকায় অটোরিকশা চালকরা সড়ক অবরোধ করেন। এতে সড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

গত ১৯ নভেম্বর বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় তিন দিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেন।

আরও পড়ুন: প্রেসক্লাবের সামনে অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ ও গণঅবস্থান

একইসঙ্গে এ বিষয়ে ব্যবস্থা না নেওয়া কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে রুলও জারি করেন আদালত। হাইকোর্টের আদেশের পরদিন থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করছেন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা।

বুধবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর দয়াগঞ্জ, মিরপুর, কল্যাণপুরসহ বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালকরা। বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁও, মহাখালী, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, গাবতলী ও ডেমরা এলাকায় জড়ো হন তারা। এতে এসব এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। 

শুক্রবার দুপুরে জুরাইনে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা। এতে আটকা পড়ে নারায়ণগঞ্জ ও নকশিকাঁথা নামে দুটি কমিউটার ট্রেন। 

এছাড়া বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। শনিবার  জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সাত দফা দাবি বাস্তবায়নে সমাবেশ করেন তারা।

Link copied!