ব্যাংকে গিয়েছেন, নিজের টাকা নিজে রাখতে চান, তুলতে চান বা সঞ্চয়পত্র খুলতে চান। ব্যাংক আপনার কাছ থেকে চাচ্ছে বিভিন্ন রকমের কাগজ পত্র। ঋণ নিতে চান, দিতে চায় না! কে আপনি? আপনাকে কেন ঋণ দিবে?
অথচ এই ব্যাংকগুলোই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বড় ঋণ খেলাপির মাধ্যম। ব্যাংক আপনার আমার মত সাধারণ মানুষের টাকা আমানত নিয়ে চলে। সেই টাকা থেকে আপনাকে-আমাকে ঋণ না দিয়ে দিচ্ছে এমন কিছু পক্ষকে যারা বছরের পর বছর ঋণ পরিশোধ না করে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়াচ্ছে।
বাংলাদেশে বর্তমানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কত জানেন?
গত বছরের ডিসেম্বরের শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা। হাজার কোটি টাকায় না, ব্যাংক খাতে ঋণ গড়িয়েছে লাখ কোটিতে। এখনো অপরিশোধিত এই ঋণের অর্থ মোট বিতরণ করা ঋণের ৯ শতাংশ।
আরও কিছু আশঙ্কামূলক তথ্য আছে, যা শুনলে আপনার উদ্বেগ বেড়ে যেতে পারে।
নির্ভার হয়ে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন যেসব বাণিজ্যিক ব্যাংকে আপনি আমানত রাখছেন, সেগুলোর প্রথম সারিরগুলোই রয়েছে অসুস্থ অবস্থায়।
খেলাপি ঋণের শীর্ষে থাকা ১০টি ব্যাংকের প্রথম তিনটিই সরকারি। এই তিনটি ছাড়া আরও তিনটি সরকারি ব্যাংক আছে এই ১০ ব্যাংকের তালিকায়।
ব্যাংক খাতে ঋণ খেলাপি অর্থের পরিমাণের দিক থেকে সবার ওপরে অবস্থান করছে অগ্রণী ব্যাংক। প্রায় ১৮ হাজার ১০০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ জড়ো রয়েছে অগ্রণী ব্যাংকের হিসাবে।
জনতা ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ সাড়ে ১৭ হাজার কোটি টাকা।
এরপর আসে দেশের সর্ববৃহৎ রাষ্ট্রীয় বাণিজ্যিক ব্যাংক সোনালী ব্যাংক। সব মিলিয়ে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৩ হাজার ১৫০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণের হিসাব দিয়েছে ব্যাংকটি।
শিকদার গ্রুপের মালিকানাধীন বেসরকারি ন্যাশনাল ব্যাংক চতুর্থ অবস্থানে আছে ১২ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকার খেলাপি ঋণের দায় নিয়ে।
সরকারি আরেক প্রতিষ্ঠান রূপালী ব্যাংক। প্রায় ৭ হাজার সাড়ে আটশো কোটি টাকার খেলাপি ঋণ রয়েছে এই ব্যাংকের।
দেশের জনপ্রিয় বেসরকারি ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক। ৬ হাজার ৯১৮ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ টানছে শরীয়াহভিত্তিক এই ব্যাংকটি।
আরেক বেসরকারি ব্যাংক হল এবি ব্যাংক বা আরব বাংলাদেশ ব্যাংক। গেল ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫ হাজার ২৭২ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ রয়েছে ব্যাংকটির হিসাবে।
কৃষকদের আস্থার জায়গা কৃষি ব্যাংক। সরকারি এই ব্যাংকটি প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণের ভাগিদার।
আল–আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক প্রায় ৩ হাজার ১০০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ গুনেছে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত।