সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ এসেছে। এখনও পর্যন্ত সাংবাদিকসহ ২৯৭ জন আহতের খবর এসেছে। শিক্ষার্থীদের হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা করেছে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’।
রোববার চীন সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এবং সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর ও শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে পর পর দুই দিন প্রধানমন্ত্রীর ‘রাজাকারের নাতি-পুতি’ ও ‘নিজেদের রাজাকার বলতে লজ্জা করে না?’- এমন প্রশ্নের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে ছাত্র-শিক্ষক সম্মেলন কেন্দ্রে (টিএসসি) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হন। এ সময় ‘কোটা না, কোটা না, মেধা মেধা’ শ্লোগান দিতে শোনা যায় তাদের।
সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরে শিক্ষার্থীদের নিজেদের ‘রাজাকার’ আখ্যায়িত করে শ্লোগান দেওয়ার সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “এটা চরম ধৃষ্টতা। ছাত্রলীগই এর জবাব দেবে।”
ওবায়দুল কাদেরের এই মন্তব্যের পর পরই দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ আসতে থাকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
অন্যদিকে সোমবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শিক্ষার্থীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ছাত্রলীগের হামলার ঘটনাকে ‘ন্যক্কারজনক’ ও ‘কাপুরুষোচিত’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, পুলিশ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা যৌথভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পৈশাচিক হামলা চালিয়ে অসংখ্য ছাত্রছাত্রীকে আহত করেছে। ক্ষমতা হারানোর ভয়েই এই হিংস্র হামলা। শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবিকে রক্তাক্ত পন্থায় দমনের যে দৃশ্য দেশবাসী দেখল, তা ফ্যাসিবাদের আরেকটি হিংস্র অধ্যায় হিসেবে ইতিহাসে সংযোজিত হবে। এটাই আওয়ামী ফ্যাসিবাদের চিরাচরিত বৈশিষ্ট্য। এদের হাতে জনগণ, রাষ্ট্র, সমাজ, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব কখনোই নিরাপদ নয়।
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছেন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে’র সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। সোমবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে দোয়েল চত্বর এলাকায় সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিংয়ে এই ঘোষণা করেন তিনি। নাহিদ ইসলাম ঘোষণা করেন, মঙ্গলবার বিকেল তিনটায় বিক্ষোভ মিছিল করবেন শিক্ষার্থীরা। তিনি জানান, আমাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। আমাদের নারী শিক্ষার্থীরাও আহত হয়েছেন। আমরা খবর পেয়েছি, এখনও পর্যন্ত দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে দিনভর দফায় দফায় সংঘর্ষ ও হামলার মধ্যে বিকেল পাঁচটার দিকে অনুষ্ঠিত জরুরি বৈঠকে বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে শান্তিপূর্ণ শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে পাঁচটি সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে তারা। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নাশকতামূলক কাজে কেউ জড়িত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীরা স্ব স্ব হলে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করবেন, প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক হলে অবস্থান করবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন, হলগুলোতে কোনও বহিরাগত অবস্থান করতে পারবেন না, যেকোনও ধরনের গুজব ও অপপ্রচার থেকে বিরত থাকতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহ্বান জানানো হচ্ছে এবং সবাইকে নাশকতা থেকে বিরত থাকতে বলা যাচ্ছে।
চীন সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘রাজকারের নাতি-পুতি সংক্রান্ত মন্তব্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে ছাত্র-শিক্ষক সম্মেলন কেন্দ্রে (টিএসসি) রাজ ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হল ও অধিভুক্ত কলেজ শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা মিছিল সহকারে রাজু ভাস্কর্যের সামনে উপস্থিত হন। তাদেরকে ‘তুমি নয়, আমি নই, রাজাকার, রাজাকার’, ‘কোটা না মেধা, মেধা, মেধা’ প্রভৃতি শ্লোগান দিতে শোনা গেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য (ভিসি) বাসভবনের সামনে কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, এতে অন্তত অর্ধশত আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আহতের খবর এসেছে। ওবায়দুল কাদেরের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এই ঘটনা ঘটে। সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, “এটা চরম ধৃষ্টতা। ছাত্রলীগই এর জবাব দেবে।”
সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুর একটার দিকে চীন সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে ছাত্র-শিক্ষক সম্মেলন কেন্দ্রে (টিএসসি) রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হতে থাকেন কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
পরে বিকেল তিনটার দিকে একই স্থানে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয় ছাত্রলীগ। এ সময় রাজু ভাস্কর্যের সামনে কোটা আন্দোলনকারী নেতারা মাইকে ঘোষণা করে বলেন, “আমাদের ওপর যদি হামলা হয়, তাহলে আমরা পাল্টা হামলা করবো। আমরা পিছু হটবো না।”
পরে মাইকিং করে শিক্ষার্থীদের ভিসি চত্ত্বর এলাকায় যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। ভিসি চত্ত্বরের সামনেই বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। সবশেষ বিকেল তিনটা ৫০ মিনিটে ধাওয়া দিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
বিকেল থেকে দফায় দফায় চলে ছাত্রলীগের হামলা। আহত শিক্ষার্থীদেরকে নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। কিন্তু সেখানেও রেহাই দেয়নি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা হেলমেট পরে, লাঠিসোটা নিয়ে প্রবেশ করে ঢাকা মেডিকেলে। এ সময় তাদের কারও কারও হাতে রড ও চাইনিজ কুড়ালও দেখা গেছে। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে আবারও ছাত্রলীগের হামলার খবর আসে।
সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে হামলার চেষ্টা করে ছাত্রলীগ। এ সময় আত্মরক্ষার তাগিদে অনেকে হাসপাতালের শৌচাগারে অবস্থান করতে থাকে। জানা গেছে, আহত শিক্ষার্থীরা জরুরি বিভাগে ১২ ও নিউরো বিভাগে ৯ জন রয়েছেন।
এ ছাড়া ঢাকা মেডিকেলের কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্সও ভাঙচুর করে তারা। আহত শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হতে গেলে সেখানে দায়িত্বশীল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের বাইরে যাওয়ার অনুরোধ করেন। একই সময় কয়েকজন সাংবাদিকের ওপরেও চড়াও হয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে শাহবাগ থানার ওসি (অপারেশন) আরশাদ হোসাইন দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় অনলাইন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “এখানে সবাই চিকিৎসা নিতে এসেছেন। আমরা আন্দোলনকারীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ যারা আছেন তাদের চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করছি। আর অতর্কিতে হামলার ঘটনা শুনে আমরা তাৎক্ষণিক এখানে উপস্থিত হয়েছি। আমাদের উপস্থিতির আগেই হামলাকারীরা ঢাকা মেডিকেল ছেড়েছে।”
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলের প্রভোস্ট ড. মোহাম্মদ জাভেদ হোসেনকে ‘দালাল’ বলে সম্বোধন করেছেন। শিক্ষার্থীদের তিনি হলে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করলে ‘দালাল’ বলে হৈ-হট্টগোল শুরু হয়। শ্লোগান ওঠে- ’দালাল দালাল’, ‘ভুয়া ভুয়া’।
ক্যাম্পাসে শ্লোগানরত শিক্ষার্থীরা প্রভোস্টের অনুরোধ প্রত্যাখ্যানের পর সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমানও উপস্থিত হন। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “সবকিছু আমাদের হাতে নেই। সুযোগ থাকলে আমরা বহিরাগতদের আগেই সরিয়ে দিতাম। এখন আমরা হল প্রভোস্ট ও হাউস টিউটরদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হলের অভ্যন্তরে ঢুকিয়ে বহিরাগতদের বের করার ব্যবস্থা করবো। শিক্ষার্থীদের হলে ঢোকানোর আগে বহিরাগতদের বের করাটা কঠিন হচ্ছে।”
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ক্যাম্পাসে আন্দোলনকারীদের প্রতি হলগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে’র অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। সন্ধ্যা সাতটা ১৪ মিনিটে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমাদের আজ হেরে গেলে চলবে না। একসঙ্গে প্রতিরোধ করতে হবে। আপনারা অনেকে ক্যাম্পাস এলাকার আশেপাশে আছেন, সেখানে নিজেদের মধ্যে গ্রুপ করে সংগঠিত হয়ে সবাইকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।”
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে শাখা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হামলার অভিযোগ এসেছে। হামলায় এক শিক্ষক ও চার ছাত্রীসহ আহত হয়েছেন অন্তত ৬০ জন। আহত শিক্ষক হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক আওলাদ হোসেন।
এর আগে সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। সোয়া সাতটার দিকে তারা বটতলার দিকে গেলে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের নেতৃত্বে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে চার ছাত্রীসহ ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে’র জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুর রশিদ জিতু, মাহফুজ ইসলাম মেঘ, নাজমুল ইসলামসহ অন্তত ১০ জন আহত হন।
রাত নয়টার দিকে আহতের সংখ্যা জানিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. শামসুর রহমান বলেন, “ছাত্রলীগের হামলায় অন্তত ৬০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে গুরুতর আহতদের সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।”
ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদস্বরূপ রাত নয়টা ৫৫ মিনিটে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান গ্রহণ করেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) একাধিক বাম ধারার ছাত্র সংগঠনের পাঁচজন ছাত্রনেতার ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। সোমবার (১৫ জুলাই) বিকেলে কোনওরকম বিরোধ ছাড়াই প্রক্টর বরাবর হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
আহত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও ছাত্র নেতাদের পরিচয়- বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের আহ্বায়ক তারেক আশরাফ, ছাত্র ইউনিয়নের যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিব হোসেন, ছাত্রফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সদস্য আল আশরাফ রাফী, ছাত্র গণমঞ্চের আহবায়ক নাসিম সরকার ও ইব্রাহিম নামের একজন শিক্ষার্থী। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, “সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মমতাজ উদ্দিন কলা ভবনের দিকে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগের কয়েকজন এসে অতর্কিত হামলা করে ও তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।”
এ ছাড়া ছাত্রলীগের পৃথক একটি হামলায় অন্তত পাঁচজন আহতের খবর এসেছে।
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়াউর হলের ৪২০ নম্বর কক্ষে এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওই নেতাকে হলত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
দেশব্যাপী ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে’ হামলার প্রতিবাদ ও সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা। সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে কুয়াকাটা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা। সড়কে অবস্থান নিয়ে মোবাইলে আলো জ্বালিয়ে কোটাবিরোধী শ্লো গান দিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) কোটা আন্দোলনকারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেছেন শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
হামলার ঘটনায় হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা হামলাকারীদের খুঁজতে লাটিসোটা নিয়ে বের হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে রাত ১১টা পর্যন্ত দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
হামলার শিকার ওই শিক্ষার্থীর নাম ফরহাদ কাউসার। তিনি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১৬তম আবর্তনের শিক্ষার্থী।