সিঙ্গাপুরে করোনার টিকা নিয়ে মারা যাওয়া এক বাংলাদেশীর পরিবার পাচ্ছে ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

এপ্রিল ১৮, ২০২৩, ০১:৩৭ এএম

সিঙ্গাপুরে করোনার টিকা নিয়ে মারা যাওয়া এক বাংলাদেশীর পরিবার পাচ্ছে ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ

সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাসের টিকার বুস্টার ডোজ নিয়ে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় মারা গিয়েছিলেন দুই নাগরিক। ওই দুই ব্যক্তির পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিয়েছে দেশটির সরকার। তাঁরা দুজনেই প্রবাসী। এরমধ্যে একজন বাংলাদেশের, অন্যজন ফিলিপাইনের নাগরিক। সিঙ্গাপুর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে হংকংভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।

পত্রিকাটির সোমবার প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে জানা যায়, বুস্টার ডোজ নেওয়ার চার দিন পর মারা যান এক নারী। ওই নারীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিয়েছে সিঙ্গাপুরের ভ্যাকসিন ইনজুরি ফিন্যান্সিয়াল অ্যাসিস্ট্যান্স প্রোগ্রাম। ওই কর্মসূচির আওতায় তাঁর পরিবারকে এককালীন ২ লাখ ২৫ হাজার সিঙ্গাপুরিয়ান ডলার বা ১৭ এপ্রিলের বিনিময় হার অনুযায়ী ১ লাখ ৬৯ হাজার মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। ১৭ এপ্রিলের বিনিময় হার অনুযায়ী বাংলাদেশি মুদ্রায় ওই অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ কোটি ৭৯ লাখ ৭২ হাজার টাকা।

সিঙ্গাপুরে ভ্যাকসিন নেওয়ার পর কারও গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে ওই ব্যক্তি বা তাঁর পরিবারকে এককালীন আর্থিক সহায়তা দেওয়ার জন্য সরকার ভ্যাকসিন ইনজুরি ফিন্যান্সিয়াল অ্যাসিস্ট্যান্স প্রোগ্রাম চালু করেছে।

ওন্টাল শার্লিন ভারগাস নামের ওই ফিলিপিনো নারী ২০২১ সালের ১৩ ডিসেম্বর মারা যান। তাঁর মৃত্যুর তদন্ত রিপোর্টে দেখা গেছে, মৃত্যুর কারণ ছিল মায়োকার্ডাইটিস বা হৃৎপিণ্ডের প্রদাহ। সন্দেহজনক মৃত্যুর তদন্তকারী কর্মকর্তা গত ১৪ এপ্রিল আদালতে এ তথ্য পেশ করেন। সিঙ্গাপুরে সন্দেহজনক মৃত্যুর তদন্তকারী কর্মকর্তা অ্যাডাম নাখোডা তাঁর রিপোর্টে লেখেন, কোভিড-১৯ টিকা এই মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গত রবিবার এক বিবৃতিতে জানায়, ভারগাসের পরিবার চলতি বছরের জানুয়ারিতে একটি ক্ষতিপূরণের আবেদন করে। যা একটি স্বাধীন ক্লিনিক্যাল প্যানেলকে দিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। প্যানেল মূল্যায়নে দেখা গেছে, ওই নারীর মৃত্যু সম্ভবত কোভিড-১৯–এর টিকা দেওয়ার সাথে সম্পর্কিত ছিল। ফিলিপাইনে তাঁর পরিবারকে ২ লাখ ২৫ হাজার সিঙ্গাপুরিয়ান ডলার (১ লাখ ৬৯ হাজার মার্কিন ডলার) এককালীন আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

৪৩ বছর বয়সী ওই নারী ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে কোভিড-১৯–এর ফাইজার-বায়োএনটেক টিকা নিয়েছিলেন। এর পরদিন সকালেই তিনি অসুস্থ বোধ করেন এবং সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। ১২ ডিসেম্বর থেকে তিনি কোনো ওষুধেই সাড়া দিচ্ছিলেন না। উপযুক্ত চিকিৎসার পরও তাঁর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটতে থাকে। ১৩ ডিসেম্বর তিনি মারা যান।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত অপর একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, কোভিড-১৯ টিকা নিয়ে মারা যাওয়া এক বাংলাদেশি যুবকের (২৮) পরিবারকে সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশি ওই যুবকের মৃত্যুর বিষয়ে সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চিকিৎসা পদ্ধতির ভুলের কারণে ওই যুবকের মৃত্যু হয়। তিনি টিকা নেওয়ার ২১ দিন পর কর্মস্থলে মারা যান। তিনি কোভিড-১৯ এর মডার্না-স্পাইকভেক্স টিকা নিয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যুর কারণও ছিল মায়োকার্ডাইটিস বা হৃৎপিণ্ডের প্রদাহ।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ২৮ বছর বয়সী ওই বাংলাদেশি যুবক ২০২১ সালের ১৮ জুলাই টিকার প্রথম ডোজ নেন। আর একই বছরের ৯ জুলাই তিনি তাঁর কর্মস্থলে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যান। দ্রুতই তাঁর মৃত্যু হয়। মন্ত্রণালয়ের অধীন ভ্যাকসিন ইনজুরি ফিন্যান্সিয়াল অ্যাসিস্ট্যান্স প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে তাঁর পরিবারকেও এককালীন ২ লাখ ২৫ হাজার সিঙ্গাপুরিয়ান ডলার দেওয়া হবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

Link copied!