রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সমালোচক অ্যালেক্সেই নাভালনির শারীরিক অবস্থা উদ্বেগজনক। এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের একটি দল। দ্রুত তাকে রাশিয়া থেকে সরিয়ে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসাসেবা দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
মত প্রকাশের স্বাধীনতা, নির্যাতন, বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড এবং শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের অধিকার সম্পর্কিত চারজন স্বতন্ত্র বিশেষজ্ঞ সতর্ক করে বলেন, ‘আমাদের বিশ্বাস নাভালনির জীবন ভয়াবহ ঝুঁকিতে রয়েছে।
অবিলম্বে উন্নত চিকিৎসার জন্য তারা নাভালনিকে বিদেশে পাঠানোর জন্য রাশিয়ার সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তারা জোর দিয়ে বলেছেন, কারাগারে থাকা অবস্থায় নাভালনির মৃত্যু হলে রুশ সরকারকে এর দায় নিতে হবে।
এর আগে একই ধরনের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ভ্লাদিমির পুতিনের সমালোচক ও প্রধান এই বিরোধী নেতাকে দেখতে তার চিকিৎকদের ‘অনতিবিলম্বে’ অনুমতি দেয়ার জন্য রাশিয়ার প্রতি অনুরোধ জানায় ওয়াশিংটন।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রয়োজনীয় ও চিকিৎসাসেবা দিতে আমরা তাদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।’ তিনি বলেন, তার (নাভালনির) স্বাস্থ্যের অবস্থার অবনতির জন্য রুশ কর্তৃপক্ষ দায়ী।
নেড প্রাইস আরও বলেন, ‘আমরা অবশ্যই নজর রাখছি এবং আরও পদক্ষেপ নিতে আমরা দ্বিধা করব না। রাশিয়ায় মানবাধিকারের স্বার্থে জনাব নাভালনির প্রয়োজনেই এটা করা উচিত।’
বর্তমানে পেনালে কলোনিতে থাকা নাভালনি দীর্ঘদিন ধরে অনশনে থাকার কারণে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। উন্নত চিকিৎসা পাচ্ছিলেন না বলেই মূলত তার এই অনশন।
এদিকে, জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নাভালনিকে যেভাবে রাখা হয়েছে তা অমানবিক। এর আগে রাশিয়ার বেশ কয়েকজন চিকিৎসক তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই হয়তো তার মৃত্যু হতে পারে। তার চিকিৎসার বিষয়ে এখনই গুরুত্ব দেয়া না হলে তাকে বাঁচানো সম্ভব হবে না।
চিকিৎসকরা জানান, তার রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে এটা ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে, তার কোনো সময় কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বা কিডনি অচল হয়ে যেতে পারে। এতে করে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে পারে এবং তার মৃত্যুও হতে পারে।
পুরোনো একটি মামলায় গত ফেব্রুয়ারিতে নাভালনিকে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ৩১ মার্চ থেকে তিনি অনসন শুরু করেন। ভ্লাদিমির পুতিনের কড়া সমালোচক ৪৪ বছর বয়সী নাভালনির পেছনে উঠে পড়েছে লেগেছে মস্কো।
এর আগে ২০২০ সালের আগস্টে নাভালনিকে ক্যামিকেল নার্ভ এজেন্ট নোভিচক প্রয়োগ করে হত্যার চেষ্টা করা হয়। সে সময় তিনি মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছিলেন। সে সময় নাভালনি অভিযোগ করেছিলেন যে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশেই তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে এ বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে।