এপ্রিল ১, ২০২২, ১০:১০ এএম
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, পাকিস্তানের পার্লামেন্টে উত্থাপিত অনাস্থা প্রস্তাবের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের হাত রয়েছে বলে যে অভিযোগ দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান করেছেন তা ভিত্তিহীন। স্টেট ডিপার্টমেন্টে জানিয়েছে, এটা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী স্লিপ অব টাঙ্গ বা ভুল করে বলে ফেলেছেন এমন বক্তব্য। এর কারণে বক্তব্যের মধ্যেই সংশোধনীতে বলেছেন, এটা আমেরিকা নয় অন্য কোন দেশ হয়ত।
পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডন এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তারা বলেছেন, একটি দেশের সরকার প্রধানের কাছ থেকে এ ধরণের বক্তব্য আশা করা যায় না। এ ধরণের বক্তব্যের কারণে ইসলামাবাদের সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্ক হতাশাজনক অবস্থানের দিকে যাচ্ছে। স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানায়, ইমরান খান যেভাবে একটি চিঠিকে তার বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের কারণ হিসেবে মনে করছেন, তাতে পরবর্তিতে কোন পাকিস্তানী রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে আলাপকালে মার্কিন রাষ্ট্রদূতদের আরও বেশি সাবধান থাকার বিকল্প নেই। রাষ্ট্রদূতদের মাঝে যেকোন বিষয়ে আলাপ হতেই পারে। যেখানে রাষ্ট্রদূতরা বিভিন্ন তথ্য আদান প্রদান করে থাকেন। তবে সেই আলাপচারিতা নিয়ে যদি হতাশাজনক পরিস্থিতির জন্ম হয়, তবে রাষ্ট্রদূতরা পরবর্তিতে আর আলোচনা করতে সাহস পাবেন না।
যদিও পাকিস্তানের সাংবাদিক নাসিম জেহরা বলেছেন, পাকিস্তানী রাষ্ট্রদূত আসাদ মজিদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক কর্মকর্তার আলোচনা হয়েছিলো এতে কোন সন্দেহ নেই। সে আলোচনায় তিনি রাস্ট্রদূত আসাদ মজিদকে বলেছিলেন, পাকিস্তানে কোন উন্নয়ন সম্ভব নয়, যদি ইমরান খান ক্ষমতায় থাকেন। মূলত গত বৃহস্পতিবার ওই আলোচনার উপর ভিত্তি করেই ডন চিঠির বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বরাতে খবর প্রকাশ করে। পাকিস্তানের এই সাংবাদিক মনে করেন, কোন দেশের সরকার প্রধানের থাকা বা না থাকা নিয়ে অন্য কোন দেশের রাষ্ট্রদূতের এ ধরণের মন্তব্য উর্দ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য।
আগামী ৩ এপ্রিল পাকিস্তানের জাতীয় পার্লামেন্টে ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের উপর ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির জোটে থাকা মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট-পাকিস্তান (এমকিউএম-পি) অনাস্থা ভোটে ইমরানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে বলে ঘোষণা দেওয়ায় কিছুটা অস্বস্তিতে রয়েছেন ইমরান খান।
তারকা ক্রিকেটার ইমরান ২০১৮ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। তবে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা সামলাতে হিমশিম খেতে হয়েছে তাঁকে। উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি ও দিন দিন বাড়তে থাকা ঘাটতির জেরে ইমরানের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা সমালোচনার মুখে পড়েছে। এ ছাড়া সামরিক বাহিনীর সঙ্গে টানাপোড়েনের কথাও শোনা যাচ্ছে। এসব পরিস্থিতির মধ্যে গত ২৮ মার্চ জাতীয় পরিষদে তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করেন বিরোধী দলের নেতারা।