সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২২, ০৬:১২ পিএম
সম্প্রতি সৌদি আরবে মাদবদ্রব্যের ব্যবহার ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। গত সপ্তাহে রাজধানী রিয়াদের একটি গুদাম থেকে প্রায় চার কোটি ৭০ লাখ অ্যামফিটামিন বড়ির চালান আটক করে সৌদি সরকার। এসব মাদক দ্রব্য ময়দার মধ্যে লুকানো অবস্থায় ছিল। এটি দেশটির ইতিহাসে অবৈধ ওষুধের বৃহত্তম চালান জব্দের ঘটনা বলে স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলোতে জানা যায়।
সৌদি আরবের জেনারেল ডিরেক্টরেট অব নারকোটিকস কনট্রোলের তথ্যমতে, গত ১৪ সেপ্টেম্বরের অভিযানে সবচেয়ে বড় মাদক চোরাচালান আটক হয়েছে। তবে জব্দকৃত মাদকের নাম বা কোথা থেকে এসেছে তা জানায়নি সৌদি সরকার।
দেশটিতে মাদক দ্রব্যের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় তা নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন। সৌদি আরবের অনেক বৃদ্ধিজীবী এ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।দেশটিতে জব্দ হওয়া মাদকের বৃহত্তম চালান প্রসঙ্গে এক কলামিস্ট বলেছেন, এটি আমাদের বিরুদ্ধে খোলা যুদ্ধ, যা অন্য যেকোনো যুদ্ধের চেয়ে বেশি বিপজ্জনক।
সৌদি বিশেষজ্ঞদের মতে, রেকর্ড পরিমাণ মাদক জব্দের ঘটনা প্রমাণ করে সৌদি আরব মধ্যপ্রাচ্যের ‘মাদকের রাজধানী’ হয়ে উঠছে। মাদকের চাহিদা বৃদ্ধির কারণে সিরিয়া ও লেবাননের চোরাকারবারীদের প্রাথমিক গন্তব্য হয়ে উঠছে দেশটি।
বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, মাদকের জন্য সবচেয়ে বড় ও লাভজনক আঞ্চলিক গন্তব্যগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে সৌদি আরব। দিনে দিনে এই অবস্থা আরও তীব্র হচ্ছে।
এর আগে জাতিসংঘের মাদকদ্রব্য ও অপরাধ সংক্রান্ত কার্যালয়-ইউএনওডিসি জানায়, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে অ্যামফিটামিন জব্দ হওয়ার প্রতিবেদনগুলোতে প্রধানত ক্যাপ্টাগন লোগোযুক্ত ট্যাবলেট পাওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে৷
ক্যাপ্টাগন মূলত উত্তেজক ফেনিথিলাইন সমৃদ্ধ ওষুধি পণ্যের ব্র্যান্ড। যদিও এটি আর বৈধভাবে উৎপাদন করা হয় না। তবে ক্যাপ্টাগন নামের নকল ওষুধগুলো নিয়মিতভাবে মধ্যপ্রাচ্যে জব্দ করা হয়ে থাকে বলে জানায় ইউরোপীয় মনিটরিং সেন্টার ফর ড্রাগস অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডিকশন।
সৌদি আরব ও আশপাশের অঞ্চলে ক্যাপ্টাগন মাদকের জব্দের ঘটনা সময়ের সঙ্গে বেড়েছে।
সম্প্রতি ওমান উপসাগরে মাছ ধরার একটি ট্রলার থেকে ৩২০ কিলোগ্রাম অ্যামফিটামিন ট্যাবলেট এবং প্রায় তিন হাজার কিলোগ্রাম গাঁজা আটক করা হয়। মার্কিন কোস্টগার্ডের জব্দকৃত ওই মাদকের কয়েক মিলিয়ন ডলার বলে জানিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।
অ্যামফিটামিন ট্যাবলেট সম্পর্কে ওয়াশিংটন ডিসির ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের ফেলো ভান্ডা ফেলবাব-ব্রাউন বলেন, ১৫ বছর আগে সৌদি আরবে এই মাদকটি বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল। গত পাঁচ বছরে এটির ব্যাপক ব্যবহার শুরু হয়। এটি অনেকটা গাঁজার মতোই ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
এই মাদকের ব্যবহার ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়ার কারণও জানান ওই মার্কিন অধ্যাপক। তিনি মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বলেন, “সৌদিতে বানের পানির মতো মাদকটি আসছে। বেশির ভাগই আসছে সিরিয়া থেকে।”দেশটিতে বাশার আল আসাদের রাসায়নিক কারখানাগুলোতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদন করা হচ্ছে ওই মাদক দ্রব্য এবং আসাদের অনুসারীরাই এর সরবরাহ করছে বলেও তিনি জানান। সূত্র: সিএনএন