অক্টোবর ১৮, ২০২২, ০৮:২৩ পিএম
আবারো ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধের প্রসঙ্গ নিয়ে বোমা ফাটালেন মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক। তিনি এই যুদ্ধের সমাপ্তি টানতে টুইটারে একটি ‘শান্তি পরিকল্পনা’ প্রকাশ করে সমালোচিত হয়েছিলেন ক’দিন আগেই। এরপর তাইওয়ান ও চীনের মধ্যকার চলমান উত্তেজনা প্রশমনের উপায় তুলে ধরে প্রশংসাও কুড়ান বেইজিংয়ের। এবার পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ঝুঁকি নিয়ে ‘বিস্ফোরক’ মন্তব্য করলেন তিনি।
বৈদ্যুতিক গাড়িনির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান ও বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক রাশিয়ার পারমাণবিক হামলা চালানোর সক্ষমতা নিয়ে এরমধ্যেই একটি টুইট করেছেন। টুইটে তিনি বলেন, ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে পারমাণবিক বোমা হামলা চালিয়ে ৩০ মিনিটেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপকে ধ্বংস করার সক্ষমতা আছে রাশিয়ার। তিনি আরও বলেছেন, এই যুদ্ধে ইউক্রেন জয় পাবে বলে মনে হচ্ছে না।
শুক্রবার ইলন মাস্কের একজন অনুসারী তাঁর অ্যাকাউন্টে রয়টার্সের একটি প্রতিবেদন টুইট করেন। রয়টার্সের ওই প্রতিবেদনে সোমবার থেকে বি–৫২ বোমারু বিমানে করে ন্যাটোর পারমাণবিক অস্ত্রের মহড়া শুরুর খবর জানানো হয়। সেই টুইটটিই রিটুইট করেন ইলন মাস্ক। সেখানে তিনি লেখেন:
‘রাশিয়া ৩০ মিনিটেরও কম সময়ে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। ঠিক একইভাবে এই সক্ষমতা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপেরও আছে। অবাক করার মতো বিষয় হচ্ছে, বেশিরভাগ মানুষই এটা জানেন না। অবশ্যই এসব অস্ত্রের ব্যবহার করাটা হবে পাগলামি, কিন্তু এখন যে পরিস্থিতি বিরাজমান সেটিও আসলে পাগলামিই।’
এরপর টুইটটি রিটুইট করে ইলন মাস্ক আরও বলেন, ‘কিন্তু অবশ্যই কোনো দায়িত্ববান ব্যক্তি পারমাণবিক যুদ্ধ শুরু করবেন না। তবে এই যুক্তির সমস্যাটা হচ্ছে, আমাদের যদি দায়িত্ববান ব্যক্তি থাকতেন, তাহলে যুদ্ধ আমাদের অগ্রাধিকার তালিকায় থাকত না। গত ৬০ বছরের মধ্যে আমরা পারমাণবিক যুদ্ধের সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছি।’
এর আগে চলতি মাসের শুরুতে টুইটারে ইলন মাস্ক প্রস্তাব দিয়ে বলেন, গত সপ্তাহে (সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে) ইউক্রেনের যে চারটি অঞ্চলকে রুশ ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত করতে রাশিয়া গণভোট করেছে, সেখানে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন হতে হবে। মাস্ক লিখেছেন, ‘মানুষ যদি চায়, সেখান থেকে রাশিয়া চলে যাবে। চলুন এ বিষয়টি নিয়ে চেষ্টা করে দেখি: দনবাস ও ক্রিমিয়াতে যারা বসবাস করেন, তাঁদের ইচ্ছা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে তাঁরা রাশিয়া নাকি ইউক্রেনের অংশ।’
ইলন মাস্ক আরও লেখেন, ‘রাশিয়ার জনসংখ্যা ইউক্রেনের চেয়ে তিন গুণ। সুতরাং পুরো যুদ্ধে ইউক্রেন জয় পাবে বলে আমার মনে হচ্ছে না। আপনারা যদি ইউক্রেনের জনগণের কথা ভেবে থাকেন, তবে শান্তির পথে আসুন।’
মাস্কের এ মন্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। মাস্কের ওই প্রস্তাবের সমালোচনা করে টুইটারে পাল্টা একটি পোস্ট দিয়ে জেলেনস্কি লেখেন:
‘কোন ইলন মাস্ককে আপনি বেশি পছন্দ করেন?’ প্রশ্নের নিচে সম্ভাব্য দুটি উত্তর লিখে যেকোনো একটিকে বেছে নিতে বলেছেন তিনি। উত্তর দুটি হলো, ‘যিনি ইউক্রেনকে সমর্থন করেন এবং যিনি রাশিয়াকে সমর্থন করেন।’
সূত্র: রয়টার্স