ডিসেম্বর ১০, ২০২৩, ০১:৫০ পিএম
সঠিকভাবে হিজাব না করায় মাহসা আমিনিকে কারাগারে ধরে নিয়ে গিয়েছিল ইরানের নৈতিকতা পুলিশ। মৃত্যুর পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সর্বোচ্চ মানবাধিকার পুরস্কার পাওয়া কুর্দি নারী মাসা আমিনির পরিবারের সদস্যরা পুরস্কার নিতে ফ্রান্স যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।
কিন্তু তাঁদের নির্ধারিত ফ্লাইটে উঠতে দেওয়া হয়নি। তাঁদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। শনিবার ( ৯ ডিসেম্বর ) মাসা আমিনির পরিবারের আইনজীবী এএফপিকে এসব কথা বলেন।
মাসা আমিনি ইরানের ধর্মীয় পুলিশের (ধর্মবিষয়ক বিধিগুলো তদারককারী) হেফাজতে থাকা অবস্থায় ২০২২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর মারা যান। ইরানে নারীদের জন্য নির্ধারিত কঠোর পোশাকবিধি লঙ্ঘন করার অভিযোগে তাঁকে আটক করেছিল পুলিশ। মৃত্যুর সময় মাসার বয়স ছিল ২২ বছর।
মাসা আমিনির পরিবার ও সমর্থকেরা বলেছেন, তাঁকে পুলিশি হেফাজতে হত্যা করা হয়েছে। তবে ইরানি কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, অজানা এবং পুরোনো একটি অসুখের কারণে মাসার মৃত্যু হয়েছে।
মাসার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া “নারী, জীবন, স্বাধীনতা” আন্দোলনকেও যৌথভাবে এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে। চলতি বছরের অক্টোবরে মাসা আমিনিকে মৃত্যুপরবর্তী শাখারভ পুরস্কার দেওয়া হয়। এটি ইইউর সর্বোচ্চ মানবাধিকার পুরস্কার।
আরদাকানি বলেন, বৈধ ভিসা থাকার পরও পরিবারটিকে ইরান ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। পাসপোর্টগুলো জব্দ করা হয়েছে।
এই আইনজীবী আরও বলেন, ‘আগে কখনো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে ভুক্তভোগী পরিবারকে কথা বলা ঠেকাতে ইরানি কর্তৃপক্ষকে এতটা সক্রিয় হতে দেখা যায়নি।’
মাসা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইরানে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। এর জেরে পরে ‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’ নামে বিশ্বব্যাপী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। এ আন্দোলন থেকে আহ্বান জানানো হয়, ইরান যেন নারীদের হিজাব পরার বাধ্যবাধকতা প্রত্যাহার করে এবং দেশটিতে যেন ‘মুসলিম ধর্মগুরুর নেতৃত্বাধীন’ সরকারের অবসান হয়।
ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী এসব বিক্ষোভের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়েছেন। এতে কয়েক শ মানুষ নিহত হয়েছেন। ইরানে বেশ কয়েকজনকে মৃত্যুদণ্ডও দেওয়া হয়েছে। বিক্ষোভে জড়িত থাকার অভিযোগে তাঁদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ওই বিক্ষোভকে ইরানি কর্তৃপক্ষ ‘দাঙ্গা’ বলে অভিহিত করে থাকে।
১৩ ডিসেম্বর ইউরোপীয় পার্লামেন্টে এক অনুষ্ঠানে শাখারভ পুরস্কার প্রদান করা হবে। পুরস্কারের অর্থমূল্য ৫০ হাজার ইউরো।