২ ইসরায়েলি নারীকে মুক্তি দিয়েছে হামাস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

অক্টোবর ২৪, ২০২৩, ১১:০৯ পিএম

২ ইসরায়েলি নারীকে মুক্তি দিয়েছে হামাস

ছবি: সংগৃহীত

গাজায় জিম্মি করে রাখা দুই ইসরায়েলি নাগরিককে মুক্তি দেওয়া হয়েছে । সোমবার আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এতে বলা হয়েছে, হামাস জানিয়েছে, কাতার ও মিশরের প্রচেষ্টার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় জিম্মি করে রাখা ইসরায়েলি নাগরিকদের মধ্যে দুইজনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। মুক্তি পাওয়া দুইজনই নারী।

ইসরায়েলি গণমাধ্যম চ্যানেল ১২ এর বরাত দিয়ে আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জিম্মি দুই ইসরায়েলিকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি তাদের পরিবারকে ইতোমধ্যে অবহিত করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটিও (আইসিআরসি) এক বিবৃতিতে দুই ইসরায়েলিকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি জানিয়েছে।

দুই ইসরায়েলি নাগরিককে মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র ওসামা হামাদান আল জাজিরাকে বলেছে, তাদের মুক্তির বিনিময়ে আমরা কিছুই পাইনি। মানবিক কারণে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

মুক্তি পাওয়া বয়স্ক দুই নারী হলেন ৭৯ বছরের নুরিত কুপার এবং ৮৫ বছরের ইওচেভেদ লিফশিৎজ।

সোমবার স্থানীয় সময় রাত ১০টির দিকে তাদের মুক্তি দেওয়া হয় বলে জানায় বিবিসি। মুক্তি পাওয়া দুই নারীকে চিকিৎসার জন্য রাজধানী তেল আবিবে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

গত ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালানোর পর গাজা সীমান্তবর্তী অঞ্চল কিবুৎজ নির ওজ থেকে ওই দুই নারীকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। হামাস দুই নারীর স্বামীদেরও জিম্মি করে গাজায় নিয়ে গেছে। তারা এখনো গাজায় বন্দি আছে।

দুই নারীকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে হামাসের সশস্ত্র শাখার মুখপাত্র আবু উবাইদা টেলিগ্রামে বলেন, “আমরা তাদের মানবিক দিক এবং অসুস্থতার কারণে মুক্তি দিয়েছি।”

হামাসের প্রকাশ করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, অন্ধকারের মধ্যে দুই বয়স্ক জিম্মিকে রেড ক্রসের কর্মীদের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে।

ওই সময় ইওচেভেদ লিফশিৎজ নিজের পরিচয় দিয়ে তার বয়স নিশ্চিত করেন এবং তারপর চলে যাওয়ার আগে মাস্ক পরা এক হামাস যোদ্ধার দিকে ঘুরে করমর্দন করে বলেন ‘শালম’ (শান্তি)।

ইওচেভেদের স্বামীর নাম ওদেদ, বয়স ৮৫ বছর। যিনি শান্তির পক্ষে কাজ করা একজন সমাজকর্মী। তিনি অবসর গ্রহণের পর গাজার ক্যান্সার আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য গাড়ি চালিয়ে ইসরায়েলের হাসপাতালে নিয়ে আসার কাজ করেন।

হামাসের ভিডিও প্রকাশের পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকেও এক বিবৃতিতে দুই নারীর মুক্তি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তাদের গ্রহণ করে সরাসরি হাসপাতালে নিয়ে গেছে।

এই দুই জিম্মিকে মুক্তির বিষয়ে সহায়তা করার জন্য মিশরকে ধন্যবাদ দিয়েছে ইসরায়েল। সেই সাথে জিম্মিদের বাড়িতে নিয়ে আসতে রেড ক্রসের ‘গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার’ জন্যও ধন্যবাদ দিয়েছে দেশটি।

মিশরের গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, মুক্তি পাওয়া দুই ইসরায়েলি নাগরিক স্থানীয় সময় সোমবার (২৩ অক্টোবর) রাফাহ সীমান্তে পৌঁছায়।

এর আগে জিম্মি করে রাখা দুই মার্কিন নাগরিককে গত শনিবার মুক্তি দিয়েছে হামাস। তারা হলেন—জুডিথ রানান (৫৯) ও তার মেয়ে নাতালি রানান (১৭)।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই মার্কিন নাগরিককে মুক্তি দেওয়ার পর হামাস জানায়, কাতারের প্রচেষ্টার প্রতিক্রিয়ায় ‍‍`মানবিক কারণে‍‍` জিম্মি দুই মার্কিন নাগরিককে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

দুই মার্কিন নাগরিকের মুক্তির পর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছিলেন, জিম্মি বাকিদের উদ্ধারে তাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। একইসাথে ‍‍`জয়ের আগ পর্যন্ত‍‍` ইসরায়েলি বাহিনী তাদের যুদ্ধ চালিয়ে যাবে।

ইসরায়েল বলছে, হামাসের হামলায় ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত ৪ হাজার ৬২৯ জন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৬৩ জন সেনা ও পুলিশ সদস্য।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার বিমান হামলায় ৫ হাজার ৮৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত ১৫ হাজারের বেশি মানুষ।

Link copied!