গাজায় বর্বরোচিত ইসরায়েলি অভিযানে নতুন করে ৪৩ ফিলিস্তিন নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

জুলাই ১, ২০২৪, ০৯:০৫ এএম

গাজায় বর্বরোচিত ইসরায়েলি অভিযানে নতুন করে ৪৩ ফিলিস্তিন নিহত

গাজায় বর্বরোচিত থামানোর প্রস্তাবে কোনোভাবেই কর্ণপাত করছে না ইসরায়েল। ছবি: এএফপি

অবরুদ্ধ গাজায় বর্বরোচিত ইসরায়েলি অভিযানে আরও ৪৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এই নিয়ে নিহতের সংখ্যা ৩৭ হাজার ৮৭৭ জনে উপনীত হলো। সঙ্গে সঙ্গে ইসরায়েলি অভিযানে প্রায় ৮৭ হাজার ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, ইসরায়েলি হামলায় নিহতের পাশাপাশি নতুন করে অন্তত ৮৬ হাজার ৯৬৯ জন আহত হয়েছেন।

বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় তিনটি পরিবারের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি ‘হত্যাকাণ্ডে’ নিহতের সংখ্যা ৪৩ ও আরও ১১১ জন আহত হয়েছেন। এখনও অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন। তারা এমন অবস্থায় রয়েছেন যে উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না। উল্লেখ্য, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ অনতিবিলম্বে গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবি জানানো সত্ত্বেও ইসরায়েল সেদিকে কর্ণপাত করছে না। বরং তারা গাজায় অভিযান অব্যাহত রেখেই চলেছে। অন্যদিকে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে। গতকাল রোববার ওসামা হামদান লেবাননে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ব্রিফিংয়ে জানান, আলোচনায় যেকোনও প্রস্তাব ইতিবাচকভাবে নিতে প্রস্তুত রয়েছে হামাস।

বিক্ষোভে ইসরায়েলি পুলিশের সঙ্গে সহিংসতা
এদিকে গাজায় হামাসের কাছে জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে অনতিবিলম্বে যুদ্ধবিরতির চুক্তি ও আগাম নির্বাচনের দাবিতে ইসরায়েলে বেসামরিক নাগরিকরা বিক্ষোভ শুরু করেছেন। আয়োজকরা জানান, গতকাল রোববার দেশটির রাজধানী তেল আবিবে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার বিক্ষোভকারী জমায়েত হয়েছেন। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর কোয়ালিশন সরকারের পদত্যাগ দাবিতে এই বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভের একপর্যায়ে ইসরায়েলি পুলিশের সঙ্গে সহিংসতা হয়েছে বিক্ষোভকারীদের।

ইসরায়েলি পুলিশের অভিযোগ, বিক্ষোভকারীরা পাথর ছুঁড়েছে এবং একাধিক গড়িতে হামলা করেছে। আত্মরক্ষার জন্য পুলিশ জলকামান ব্যবহার করেছে এবং বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে।

বিক্ষোভ চলছে ইসরায়েলে
প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর কোয়ালিশন সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ চলছে ইসরায়েলে। রোববার দিবাগত রাতে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে দেশটির পুলিশ। ছবি: এপি

গতকাল রোববার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে গাজায় হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের পরিবারের সদস্যরা সেখানে বক্তব্য রাখেন। একজন জিম্মির স্বজন মন্তব্য করেন, “বন্দী বিনিময় চুক্তির অংশ হিসেবে যুদ্ধ বন্ধ না করতে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জেদ আমাদের ও আমাদের প্রিয়জনের মধ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে।”

গাজায় হামাসের হাতে বন্দী থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী ইয়োরাম মেৎসগারের (৮০) স্মৃতিচারণ করে নেতানিয়াহু তার পুত্রবধূ এল মেৎসগার বলেন, “যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার অর্থ জিম্মিরা ইসরায়েলি সরকারের হাতে মৃত্যুবরণ করবে। আপনার হাত রক্তে রঞ্জিত। প্রতিবার শেষ মুহূর্তে সব সমঝোতা নস্যাৎ করে দেন নেতানিয়াহু। পরবর্তী চুক্তি আটকে দেওয়া থেকে অবশ্যই নেতানিয়াহুকে বিরত থাকতে হবে।”

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা শুরু করে হামাস। প্রতিক্রিয়াস্বরূপ গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। টানা ৯ মাস ধরে উপত্যাকাটিতে দেশটির অভিযান চলছে। ইসরায়েলি অবরোধের কারণে সেখানকার লোকজনের কাছে ত্রাণ পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে এরই মধ্যে ইসরায়েল গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।

সূত্র: এপি, আল জাজিরা

Link copied!