ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের নির্বিচার বোমা হামলা ও স্থল অভিযানের লাগাম টেনে ধরতে যুদ্ধবিরতির আহ্বান যখন সারা বিশ্বে জোরালো হচ্ছে, তখন হামলারা মাত্রা আর ভয়াবহ করে তুলছে ইসরায়েল।
গাজার উত্তরাঞ্চলে জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলের হামলায় ৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। এখনো নিখোঁজ আছেন অনেকে।
আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে জানা যায়, স্থানীয় সময় রবিবার এ হামলা চালায় ইসরায়েল।
জাবালিয়া শহরের একটি আবাসিক ব্লকে হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও আহত ব্যক্তি ও মরদেহ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হামলায় শিশুসহ আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোতে নিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে এসব চিকিৎসাকেন্দ্র আগে থেকেই রোগীতে ভরে আছে।
এদিকে ‘প্যালেস্টানিয়ান ইসলামিক জিহাদ’ দলের এক কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানান, তাদের দলের মুখপাত্র দাউদ শেহাবের ছেলে এই হামলায় নিহত হয়েছেন। টেলিফোন মাধ্যমে তিনি আরও জানান, ‘ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকা মরদেহের সংখ্যা অনেক বেশি। কিন্তু ইসরায়েলি হামলার মাত্রা এত বেশি যে এসব ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে তাঁদের উদ্ধারের কোনো উপায় নেই।’
অন্যদিকে গাজার মধ্যাঞ্চলেও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। যে হামলায় অন্তত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। আর দক্ষিণাঞ্চলে এক বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরায়েলে হামলা চালায়। এ হামলায় ১ হাজার ২০০ জনের মতো নিহত হয়েছেন বলে দাবি ইসরায়েলের। আর প্রায় ২৪০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস।
এ হামলার জবাবে গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ১৮ হাজার ৮০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাঁদের ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু।
আর এ যুদ্ধের কারণে গৃহহীন হয়ে পড়েছে প্রায় ১৯ লাখ মানুষ। গাজার বাসিন্দারা অনাহারে মারা যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ফিলিস্তিনের শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি।