ভারতে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে বার্তাকক্ষ পরিচালনা করেছে বিবিসি। বুধবার থেকেই নতুন ধরনের এই ব্যবস্থাপনার যাত্রা শুরু হলো।
দেশটির আইন অনুযায়ী বিদেশি বিনিয়োগের শর্ত পূরণ করতে পরিবর্তন আনা হয়েছে সংবাদমাধ্যমটির পরিচালনা কাঠামোতে। ইংরেজি ভাষার ডিজিটাল, টেলিভিশন ও রেডিওর সংবাদকর্মীরা সরাসরি বিবিসির লন্ডন সদর দপ্তরের অধীনে কাজ করবেন। অন্যদিকে কালেক্টিভ নিউজরুম (সামষ্টিক বার্তাকক্ষ) নামে একটি নতুন, স্বাধীন, ভারতীয় মালিকানাধীন কোম্পানি বিবিসির ভারতীয় ভাষার সার্ভিসগুলোর জন্য সংবাদ সংগ্রহ, প্রকাশ বা প্রচারের কাজ করবে।
এখন থেকে বিবিসি হিন্দি পরিচালিত হবে কালেক্টিভ নিউজরুমের অধীনে। এছাড়া মারাঠি, গুজরাটি, পাঞ্জাবি, তামিল ও তেলেগু ভাষাভাষীদের জন্য সংবাদমাধ্যমটির পৃথক আউটলেট বা ওয়েবসাইট রয়েছে। এসব পরিষেবাও কালেক্টিভ নিউজরুমের মাধ্যমে পরিচালিত হবে।
এর আওতায় আরও থাকছে বিবিসি নিউজ ইন্ডিয়া নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল। এতে ইংরেজি ভাষায় কনটেন্ট আপলোড করা হবে। বিবিসি ইন্ডিয়ার অফিসে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের তল্লাশির এক বছর পর এই দুই ভাগে ভাগ করা এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
গুজরাটে মুসলিমদের ওপর গণহত্যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অভিযুক্ত করে যুক্তরাজ্যে একটি ডকুমেন্টারি সম্প্রচার করা হলে দেশটির আয়কর কর্মকর্তারা হানা দেন বিবিসি ইন্ডিয়ার কার্যালয়ে। তখনই বিবিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, নতুন রূপে কার্যক্রম পরিচালনায় ভারতীয় এফডিআই আইন মেনে চলার পাশাপাশি ভারত ও বিশ্বব্যাপী দর্শকদের প্রতি প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে সক্ষম হবে তারা।
দেশটিতে বিবিসির সাপ্তাহিক দর্শকের সংখ্যা প্রায় সোয়া আট কোটি। ১৯৪০ সালে প্রথমে হিন্দি সার্ভিস চালুর মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল সেই পথচলা। এবার বিবিসিরই চার সংবাদকর্মীর হাত ধরে আলোর মুখ দেখলো কালেক্টিভ নিউজরুম। প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ২০০ জন সাবেক বিবিসি কর্মী নিয়োগ পাচ্ছেন।
ভারত ও বিশ্বব্যাপী অন্যান্য সংবাদমাধ্যমের জন্যও খবর সংগ্রহ ও সরবরাহ করবেন তারা। এর বাইরে থাকা ৯০ কর্মী সরাসরি বিবিসির টেলিভিশন, রেডিও ও অনলাইনের জন্য সংবাদ সংগ্রহের কাজ করবেন। তাদের ভাষাগত মাধ্যম হবে ইংরেজি।
কালেক্টিভ নিউজরুমের প্রধান নির্বাহী রূপা ঝা বলেন, ‘নতুন কোম্পানির লক্ষ্য হলো সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য, সৃজনশীল ও সাহসী সাংবাদিকতা। দ্রুতই একটি স্বাধীন সংবাদ সংস্থা হিসাবে দর্শক-শ্রোতা ও পাঠকের সামনে আবির্ভূত হবে কালেক্টিভ নিউজরুম।’