ইসরায়েলের সঙ্গে সশস্ত্র যুদ্ধ বন্ধে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস রাজি। তবে ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে ইসরায়েল যেসব অঞ্চল দখল করেছিল, ওই অঞ্চলগুলো নিয়ে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার শর্তও ঠুঁকে দিয়েছেন সংগঠনটির একজন নেতা।
গাজায় ২০০৭ সাল থেকে শাসনকার্য পরিচালনা করছে হামাস। ইসরায়েলের পতনের লক্ষ্যে দীর্ঘ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে সংগঠনটির যোদ্ধারা। গাজায় ইসরায়েলের চলমান হামলার ঘটনায় হামাসের ভবিষ্যৎ অনেকটাই অনিশ্চিত। এমতাবস্থায় সংগঠনটির নেতাদের এই ইঙ্গিতে বোঝা যায়, আগের অবস্থান নিয়ে সুর নরম করছেন তারা।
তুরস্কের ইস্তাম্বুলে বসবাসকারী হামাস নেতা বাসেম নাইম বলেন, ‘জেরুজালেমকে রাজধানী করে যদি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করা হয়, আর শরণার্থীদের সেখানে ফেরার অধিকার দেওয়া হয়, তবে আল কাশেম ব্রিগেডকে (হামাসের সামরিক শাখা) ভবিষ্যতে জাতীয় সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।’
মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হামাসের শর্তগুলো মেনে নেওয়া হলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াই ‘অবশ্যই’ বন্ধ করা হবে বলেও জানান ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনটির এই নেতা। তবে গাজায় অবস্থানরত হামাস নেতারা এমনটি চান কিনা সেটা এখনও জানা সম্ভব হয়নি।
যুদ্ধ বন্ধে হামাসের এই শর্তের বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু শোনেননি ফিলিস্তিনের রাজনৈতিক দল প্যালেস্টানিয়ান ন্যাশনাল ইনিশিয়েটিভের প্রেসিডেন্ট মুস্তফা বারগুতি মারওয়ান। তিনি বলেন, ‘এটা এই অর্থে গুরুত্বপূর্ণ যে দখলদারিত্বের মধ্যে থাকার কারণে ফিলিস্তিনিরা প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছেন। যদি দখলদারিত্ব না থাকে, তাহলে তাঁদের প্রতিরোধেরও প্রয়োজন পড়বে না।’
বরাবরে মতোই হামাস ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বিষয়ে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের বিরোধিতা করে আসছে। দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান অনুযায়ী, ইসরায়েলের পাশাপাশি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করা হবে। উল্টো এত দিন ফিলিস্তিনের ঐতিহাসিক সব অঞ্চল নিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র গড়ে তোলার কথা বলে এসেছে হামাস। এসব অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে আজকের ইসরায়েল, অধিকৃত পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম ও গাজা।
১৯৬৭ সালের যুদ্ধে পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম ও গাজা দখল করে ইসরায়েল। এই অঞ্চলগুলো আন্তর্জাতিক আইনের অধীন বলে বিবেচনা করা হয়। আর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অধিকাংশই এসব অঞ্চলকে দখলকৃত বলে মনে করে। এই অঞ্চলগুলো নিয়েই ভবিষ্যতে স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করতে চান ফিলিস্তিনিরা। তবে দীর্ঘদিন ধরেই তাঁদের এমন আকাঙ্ক্ষার বিরোধিতা করে আসছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু। তার দাবি, এতে ইসরায়েলের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়বে।