জুলাই ১৬, ২০২৫, ০১:০৫ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
দলীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকাকে বাতিল না করে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়ায় নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করেছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
মঙ্গলবার রাতে এক ফেইসবুক পোস্টে তিনি প্রশ্ন রেখেছেন, “অভিশপ্ত ‘নৌকা’ মার্কাটাকে আপনারা কোন বিবেচনায় আবার শিডিউল ভুক্ত করতে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠালেন?”
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা সংশোধন করে ১১৫টি প্রতীক সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বিধিমালার খসড়া পাঠানো ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়েও পাঠানো হয়েছে।
জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন পুনর্বহালের পর দাঁড়িপাল্লা প্রতীক ওই তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত থাকলেও নৌকা প্রতীক সেখানে বহাল রয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের এই ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটানো জুলাই অভ্যুত্থানের ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারে আসা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
তিনি লিখেছেন, “সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই গণঅভ্যুত্থানকে আপনারা জাস্ট বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখালেন। কাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে এবং কাদেরকে দেওয়ার জন্য এই মার্কা রাখছেন আপনারা?”
ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান দলটির নেতা শেখ হাসিনা।
অভ্যুত্থানের শরিক বিভিন্ন পক্ষের দাবিতে সরকার গত ১২ মে আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে। এরপর নির্বাচন কমিশনও রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করে।
তারপরও আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কা নির্বাচনি প্রতীক তালিকায় রাখার ব্যাখ্যায় নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেছেন, প্রতীক কখনও নিষিদ্ধ হয় না।
“নৌকা প্রতীক তো একটা পার্টির জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে; প্রতীক তো নির্বাচন কমিশনের। দলটির নামে যখন অ্যালটমেন্ট বা অ্যালোকেশন করা হয়েছে; দল তো বাতিল হয়নি। পার্টি তো আছে। পার্টি যদি বাতিলও হয়, প্রতীক তো বাতিল হবে না।”
গত ১৩ জুলাই সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, “পার্টি বিলোপ হলেও প্রতীক ইসির কাছে থাকবে; এটা আবার আরেকজনের নামে বরাদ্দ হবে। আমরা প্রতীক বাদ দেব না।”
২০০৮ সালে রাজনৈতিক দল নিবন্ধন প্রথা চালু হলে দলের নামে প্রতীক সংরক্ষিত করে ইসি।
বর্তমানে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যবহার করার জন্য নিবন্ধিত দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর ৬৯টি প্রতীক সংরক্ষিত রয়েছে।
এরমধ্যে দলের নিবন্ধন বাতিল হওয়া প্রতীকগুলোও রয়েছে তালিকায়; এমন চারটি প্রতীক বাঘ, চাবি, কুড়াল ও হুক্কা।
নৌকা প্রতীকও ইসির প্রতীক তালিকা থেকে বাদ না দেওয়ার যুক্তি তুলে ধরে আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, “আমাদের অবস্থান আইনের অবস্থান। ফ্রিডম পার্টি বোধহয় এখন অস্তিত্ব নেই; কিন্তু প্রতীক থাকবে। প্রতীকের মালিক নির্বাচন কমিশন। আমরা অ্যালট করি, দলটির নামে অ্যালট হয়ে গেলে তা ব্যবহার করবে। পার্টি ডিজলভ যদি হয়, প্রতীক ডিজলভ হবে না। এটা লজিক্যাল।”