যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রপতি জিমি কার্টার প্রয়াত

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ডিসেম্বর ৩০, ২০২৪, ১১:২৬ এএম

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রপতি জিমি কার্টার প্রয়াত

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার ১০০ বছর বয়সে এসে মারা গেছেন। তার ফাউন্ডেশন -কার্টার সেন্টার তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। রবিবার তিনি জর্জিয়ার প্লেইনসে নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন।

তার ছেলে চিপ কার্টার জানিয়েছেন, “আমার বাবা শুধু আমার কাছেই নন, যারা শান্তি, মানবাধিকার ও স্বার্থহীন ভালোবাসায় বিশ্বাস করেন, তাদের সকলের কাছেই হিরো।”

জর্জিয়ার প্লেইনসে নিজের বাড়িতে তিনি মারা যান। কার্টারই হলেন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘজীবী প্রেসিডেন্ট। গত অক্টোবরে তিনি একশ বছরে পড়েন।

কার্টার সেন্টার জানিয়েছে, প্লেইনসেই তার দেহ সমাধিস্থ করা হবে। তবে তার আগে অ্যাটলান্টা ও ওয়াশিংটনে দুইটি ইভেন্ট হবে, যেখানে মানুষ তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার দেহ সমাহিত হবে।

২০০২ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান জিমি কার্টার। 

বাইডেনের প্রতিক্রিয়া

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কার্টারের মৃত্যুর পর তাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেছেন, তিনি একজন ‘প্রিয় বন্ধু, অসাধারণ নেতা, মানবদরদী ও রাষ্ট্রনায়ককে’ হারালেন।

বাইডেন বলেছেন, “গত ছয় দশক ধরে জিমি কার্টারকে প্রিয় বন্ধু বলার সম্মান আমি পেয়েছি। কিন্তু অসাধারণ ঘটনা হলো, লাখ লাখ মানুষ যারা তাকে কখনো দেখেননি, তাদের কাছেও তিনি ছিলেন প্রিয় বন্ধু।”  

বাইডেন বলেছেন, “মানুষের প্রতি তার ভালোবাসা, নৈতিক স্পষ্টতা, রোগ দূর করার জন্য, বিশ্বে শান্তি আনার জন্য, মানুষের অধিকারের জন্য অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য, গৃহহীনদের জন্য কাজ করে যাওয়া তাকে অনন্য়সাধারণ করে তুলেছে। তিনি বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মানুষের জীবন বদলে দিয়েছেন।” 

ট্রাম্প যা বললেন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাবেক প্রেসিডেন্টের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্র জিমি কার্টারের কাছে ঋণী।”

ট্রাম্প বলেছেন, “জিমি কার্টার যুক্তরাষ্ট্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়ে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তিনি সেই সময়ে সব চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করেছেন। তিনি অ্যামেরিকার মানুষের জীবন উন্নত করতে সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করেছেন। তার জন্য আমরা কার্টারের কাছে ঋণী।”

সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ বলেছেন, “কার্টার তার কাজ দিয়ে আগামী প্রজন্মের অ্যামেরিকানদের প্রভাবিত করবেন।”

বুশ যখন ইরাকে আক্রমণের নির্দেশ দেন, তখন কার্টার তার প্রবল বিরোধিতা করেছিলেন। 

বিশ্বনেতাদের প্রতিক্রিয়া

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাখোঁ বলেছেন, “কার্টার শান্তির জন্য সারা জীবন ধরে লড়াই করেছেন। তিনি মানুষের অধিকারের কথা বলে গেছেন।”

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার বলেছেন, “বহু দশক ধরে কার্টার নিঃস্বার্থভাবে মানুষের সেবা করে গেছেন।”

ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, “জিমি কার্টার চিরদিন নিজের দেশের ও বিশ্বের মানুষদের সেবা করে গেছেন।”

দীর্ঘ দাম্পত্য জীবন

জিমি কার্টার ১৯৪৬ সালে বিয়ে করেছিলেন রোসালিন স্মিথকে। তারপর ৭৭ বছর ধরে তারা একসঙ্গে থেকেছেন। গত বছর নভেম্বরে ৯৬ বছর বয়সে মারা গেছেন রোসালিন। এবার চলে গেলেন জিমি কার্টারও। রেখে গেলেন চার সন্তান, ১১জন নাতি-নাতনি এবং তাদের ১৪ জন প্রপৌত্র ও প্রপৌত্রীকে।

Link copied!