চলতি মৌসুমে ভারী বৃষ্টির কারণে বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশেই ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১৫ জনের প্রাণহানি হয়েছে। বেশ কয়েকজন আহত ও লাখ লাখ লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
বাংলাদেশ সরকারের শরণার্থী বিষয়ক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামসুদ দৌজা জানান, বুধবার (১৯ জুন) ভোরে ভূমিধসে নিহতদের মধ্যে আটজনই রোহিঙ্গা মুসলিম। বিগত মাসে ভারী বৃষ্টি ও তাপপ্রবাহের কারণে বহু লোকের প্রাণহানি হয়েছে।
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে ভূমিধসে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর অত্যাচারে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা।
শরণার্থী শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা আমির জাফর বলেন, “ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে শত শত বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।”
সেখানে বেশির ভাগ রোহিঙ্গা শরণার্থীরাই পাহাড়ের ওপর বাঁশ ও প্লাস্টিক দিয়ে ঝুঁপড়ি ঘর নির্মাণ করে বসবাস করেন।
বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলেও বন্যা
এদিকে বৃষ্টির কারণে দক্ষিণাঞ্চলের পাশাপাশি বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলেও বন্যা দেখা দিয়েছে। এএফপিকে সিলেটের কমিশনার আবু আহমেদ সিদ্দিক বলেন, “সিলেটে হঠাৎ বন্যা ও ভারী বৃষ্টিতে অন্তত ৭ লাখ লোক ও পাশে র জেলা সুনামগঞ্জে আরও ৫ লাখ লোক আটকা পড়েছে।
আগামী কয়েক দিন ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস। গ্লোবাল ক্লাইমেট রিস্ক ইনডেক্স অনুযায়ী দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে আছে বাংলাদেশ।
ভারতের আসামে বন্যায় ছয়জনের প্রাণহানি
এদিকে সীমান্তের ঠিক ওপারে ভারতের আসামে গতকাল মঙ্গলবার রাতে বন্যা ও ভূমিধসে প্রাণ হারান অন্তত ছয়জন। রাজ্যটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা সিজু দাস রয়টার্সকে বলেছেন, ভূমিধসে এক নারী ও তার তিন মেয়ে জীবিত অবস্থায় চাপা পড়েছেন। তিনি বলেন, “তাদের বাড়ি ছিল একটি ঢালে এবং মধ্যরাতে তারা ঘটনাস্থলে মৃত্যুবরণ করেন। উদ্ধারকারীরা তিন ঘণ্টা অনুসন্ধানের পর তাদের মরদেহ উদ্ধার করে।
কর্মকর্তারা জানান, চলতি বছর মে মাসের শেষভাগে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টির কারণে বন্যা ও ভূমিধসে আসামে ৩০ জনেরও বেশি প্রাণহানি হয়েছে। এদিকে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার নয়াদিল্লি ছয় বছরের মধ্যে সবচেয়ে উষ্ণতম রাত পার করেছে। চলতি সপ্তাহে শহরটিতে অন্তত পাঁচজনের হিটস্ট্রোকে মৃত্যুর খবর এসেছে।