সামরিক ও আর্থিক ধাক্কা খেল ভারত।
ঢাক ঢোল পিটিয়ে ভারতের অত্যাধুনিক রাফাল যুদ্ধবিমান কেনা বিশ্বজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি পাকিস্তান অধ্যুষিত কাশ্মীরে হামলার জেরে পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়ার ঘটনায় এসব অত্যাধুনিক বিমান এখন বিশাল আর্থিক ক্ষতির প্রতীকে পরিণত হয়েছে।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। যদিও ভারত সরকার এই বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি। তবে ভারতের স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিনটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়ার কথা নিশ্চিত করা হয়েছে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জানিয়েছেন, ভূপাতিত হওয়া পাঁচটি যুদ্ধবিমানের মধ্যে রয়েছে তিনটি ফ্রান্সের তৈরি রাফাল, একটি রাশিয়ার তৈরি সুখোই–৩০ এবং একটি মিগ–২৯। যুদ্ধবিমানগুলো ভূপাতিত হওয়ার ঘটনায় ভারতের সামরিক শক্তিতে বড় ধাক্কা লাগার পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতির হিসেবও আকাশচুম্বী।
জানা যায়, ভারতের প্রতিটি রাফাল যুদ্ধবিমানের দাম প্রায় ২৮৮ মিলিয়ন ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকা। তিনটি রাফালের ক্ষয়ক্ষতির অর্থমূল্য দাঁড়ায় প্রায় ১০ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকা। এছাড়া, মিগ–২৯ এর প্রতিটির দাম ২০.৬৮ মিলিয়ন ডলার বা বাংলাদেশি টাকায় ২৪৮ কোটি টাকা। সু–৩০ এর দাম ৫০ মিলিয়ন ডলার, যার বাংলাদেশি মূল্য ৬০০ কোটি টাকা।
সব মিলিয়ে ভারতের একদিনে যুদ্ধবিমান হারানোর আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১১ হাজার ২০৪ কোটি টাকা। শুধু অর্থনৈতিক দিক দিয়েই নয়, কৌশলগত দিক থেকেও এই ক্ষতি ভারতকে বড় চাপের মুখে ফেলেছে বলে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মত।
ভারতের সামরিক বিনিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন
উল্লেখ্য, ভারতের হাতে আগে থেকেই ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান ছিল। পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে গত মাসে ফ্রান্স থেকে আরও ২৬টি রাফাল কেনার চুক্তি করে দেশটি। এই চুক্তির মূল্য প্রায় ৭.৫ বিলিয়ন ডলার, যা প্রতিটি রাফালের দাম দাঁড় করায় প্রায় ২৯ কোটি ডলার। ফলে এতবড় বিনিয়োগের পর মাত্র একদিনেই তিনটি রাফাল হারানো ভারতের জন্য বড় ধাক্কা।
বাংলাদেশের প্রস্তুতি কতটা নাজুক
অন্যদিকে, মিগ–২৯ ও সু–৩০ যুদ্ধবিমান দুটি সোভিয়েত আমলের প্রযুক্তিতে তৈরি হলেও এখনো বিশ্বের বহু দেশের বিমানবাহিনীতে এদের ব্যবহার হয়ে থাকে। বাংলাদেশের বিমানবাহিনীতেও ৮টি মিগ–২৯ এবং ৩৬টি চীনের তৈরি এফ–৭ রয়েছে। যদিও এফ–৭ একটি পুরোনো মডেল, যার উৎপাদন শুরু হয়েছিল ১৯৬১ সালে।
এই ঘটনার পর কৌশলগত দিক থেকে ভারতের যুদ্ধনীতিতে নতুন করে ভাবনার সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।