নেতা হিসেবে ইমরান খানকেই বেছে নিল পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ

তিথি চক্রবর্তী

ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৪, ০১:৫০ পিএম

নেতা হিসেবে ইমরান খানকেই বেছে নিল পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ

সংগৃহীত ছবি

সব ধরনের বাধাবিপত্তির পরও পাকিস্তানে নির্বাচন হয়ে গেল। পাকিস্তানে সাধারণ পরিষদ নির্বাচনে তিন দিন ধরে ফলাফল ঘোষণা করা হলো। রবিবার বাংলাদেশ সময় বেলা একটার দিকে দেশটিতে সবকটি আসন ২৬৪টিতে ফল ঘোষণা করা হয়েছে।

ঘোষিত ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, সবচেয়ে বেশি আসনে জয়ী হয়েছেন  স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তাঁদের প্রায় সবাই পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমানে কারাগারে থাকা ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) সমর্থন নিয়ে নির্বাচনে লড়েছেন।

পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ২৬৪ আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১০১ আসনে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এরপরই পাকিস্তান মুসলিম লিগ–নওয়াজ (পিএমএল-এন) ৭৫ আসনে, পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ৫৪ ও মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট পাকিস্তান (এমকিউএম) ১৭ আসনে জয়ী হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য দল পেয়েছে ১৭টি আসন।

বিভিন্ন সময় পাকিস্তান রাষ্ট্র পিটিআইয়ের নেতা–কর্মীদের ওপর দমনপীড়ন চালিয়েছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তা আরও প্রকট আবার ধারণ করে। তবে, সব ধরনের শায়েস্তার ব্যবস্থা ও নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করার পরও পাকিস্তানের তেহরিক–ই–ইনসাফের (পিটিআই) সঙ্গে সম্পর্কিত প্রার্থীরা সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। দলটির প্রতি অনুগত ভোটাররা তাঁদের প্রার্থীদের হতাশ করেননি। প্রকৃতপক্ষে ৮ ফেব্রুয়ারির আগে নির্বাচনী উত্তাপ পিটিআই বনাম রাষ্ট্র—এ দুয়ের মধ্যে টগবগ করে ফুটছিল।

সার্বিকভাবে বলা যায়, ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে। কিন্তু প্রকৃত কৃতিত্ব পাকিস্তানের ভোটারদের।

নির্বাচন থেকে এটা বেরিয়ে আসছে যে সুনির্দিষ্ট সময় ধরে একটা হাইব্রিড মডেলের সরকার পাকিস্তানকে শাসন করুক, সেটা সাধারণ মানুষ চান না।

৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন দুটি বিষয় সামনে নিয়ে এসেছে। এক. পাকিস্তানিরা গণতন্ত্রপ্রিয়। দুই. সব প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে পাকিস্তানিরা তাঁদের অধিকার প্রয়োগে ব্যাকুল।

আমেরিকার জন্যও এই ফলাফল বিব্রতকর

আপাতত যা স্পষ্ট, তা হলো পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ নেতা হিসেবে ইমরান খানকেই পছন্দ করলো। আন্তর্জাতিকভাবে এটা আমেরিকার জন্য কিছুটা বিব্রতকর হয়েছে।

ইমরানের পদচ্যুতি ও বন্দিত্বের ঘটনাবলিতে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীকে তারা গত কয়েক মাসজুড়ে নীরবে সমর্থন দিয়েছে বলেই মনে হয়েছে।

এখন পিটিআইয়ের সমর্থকদের জাতীয় পরিসরে যেকোনোভাবে ফিরে আসার মানে হবে ইমরানের কারামুক্তি। তখন রাজনীতিতে চালকের আসনে থাকবেন তিনি এবং আমেরিকার সঙ্গে দেশটির টানাপোড়েনের নতুন অধ্যায় শুরু হতে পারে। একই অবস্থা তৈরি হতে পারে বর্তমান সেনা নেতৃত্ব ও ইমরানের মধ্যেও, যা পাকিস্তানকে নতুন করে তীব্র এক রাজনৈতিক-প্রশাসনিক সংকটে ফেলবে।

Link copied!