শান্তি মানে ইউক্রেনের আত্মসমর্পন নয়, ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিমত করলেন ম্যাখোঁ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৫, ১১:৪৪ এএম

শান্তি মানে ইউক্রেনের আত্মসমর্পন নয়, ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিমত করলেন ম্যাখোঁ

ছবি: সংগৃহীত

ইউক্রেন নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে অনেক বিষয়েই একমত নন এমানুয়েল ম্যাখোঁ। যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনেও তাদের মতভেদ সামনে এসেছে।

সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে আলোচনায় বসেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাখোঁ।

পরে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে ম্যাখোঁ বলেন, “আমরা যুদ্ধ বন্ধ করতে দ্রুত চুক্তি চাই। তবে সেই চুক্তি ভঙ্গুর হলে চলবে না। আর শান্তি মানে এই নয় যে, ইউক্রেনকে আত্মসমর্পণ করতে হবে।”

কী বলেছেন ম্যাখোঁ

ম্যাখোঁ বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করা ভালো। কিন্তু পুতিনের দাবি মেনে ইউক্রেন আত্মসমর্পণ করলে তাতে আমেরিকার দুর্বলতাই প্রকট হবে।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের মতে, “ইউক্রেনের নিরাপত্তার গ্যারান্টি ছাড়া যুদ্ধ বন্ধ করা সম্ভব নয়।”

ট্রাম্প এই নিরাপত্তা সংক্রান্ত নিশ্চয়তা নিয়ে একটা কথাও বলেননি। ট্রাম্প বলেছেন, তিনি দ্রুত এই যুদ্ধ বন্ধ করতে চান। কিন্তু ম্যাখোঁ বলেছেন, “আমরাও চাই যুদ্ধ দ্রুত বন্ধ হোক। কিন্তু আমরা এমন চুক্তি চাই না যা দুর্বল।”

তবে দুই নেতা একটা বিষয়ে একমত, তা হলো, যুদ্ধ বন্ধ হওয়ার পর ইউক্রেনে ইইউ-র শান্তিরক্ষী বাহিনী থাকবে। ম্যাখোঁ বলেছেন, “শান্তিরক্ষীরা সীমান্তে থাকবে না। তারা শুধু এটুকু ঠিক করবে যে, শান্তি বজায় থাকে।”

ট্রাম্প বলেছেন, “আমি রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তিনি বলেছেন, এটা নিয়ে তার কোনো সমস্যা নেই।”

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এখন আলোচনা শুরু হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রকে কি আর নির্ভরযোগ্য বন্ধু হিসাবে ভাবা ঠিক হবে? ট্রাম্প যেভাবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে নিয়ে মন্তব্য করেছেন এবং তিনি যেভাবে বন্ধু দেশগুলির সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তারপর এই আলোচনা গতি পেয়েছে।

ট্রাম্পের দাবি খারিজ ম্যাখোঁর

ইউক্রেনকে সাহায্য করা নিয়ে ট্রাম্পের দাবি খারিজ করে দিয়েছেন ম্যাখোঁ। ট্রাম্পের দাবি ছিল, “ইউরোপ ইউক্রেনকে ঋণ দিয়েছে। তারা পরে অর্থ ফেরত পেয়ে যাবে। কিন্তু অ্যামেরিকা বোকার মতো ইউক্রেনকে শুধু অর্থ ও সামরিক সাহায্য করে গেছে।”

সেই সময় ম্যাখোঁ বলেন, “এই তথ্য ঠিক নয়। আমরাও ইউক্রেনকে অর্থ দিয়েছি। আমরা ইউক্রেনকে যে অর্থ দিয়েছি, তার ৬০ শতাংশ হলো তাদের সাহায্য করতে। অ্যামেরিকার মতো ইইউ-ও ইউক্রেনকে ঋণ, গ্যারান্টি ও অনুদান দিয়েছে।”

নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পাস

নিরাপত্তা পরিষদে আমেরিকার পেশ করা একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। সেই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দ্রুত ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। এখানে আগ্রাসনকারী হিসাবে রাশিয়ার নাম উল্লেখ করা হয়নি।

১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে ১০ জন সদস্য প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স-সহ পাঁচটি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। রাশিয়া এবং ইউরোপের দেশগুলি কিছু সংশোধনী এনেছিল। তবে তা খারিজ হয়ে যায়।

যুদ্ধের তৃতীয় বার্ষিকী

তিন বছর আগে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করে। যুদ্ধের তৃতীয় বার্ষিকী পালন ইউক্রেনের। ইউরোপের নেতারা কিয়েভের পাশে।

ইউক্রেন যুদ্ধের তৃতীয় বার্ষিকীতে ইউরোপের শহরগুলিতে কিয়েভের সমর্থনে বিক্ষোভ দেখালেন সাধারণ মানুষ। বার্লিন, প্যারিস, লন্ডন, স্টকহোম, লিথুয়ানিয়া, ওয়ারশ, সোফিয়াতে ইউক্রেনের সমর্থনে ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে।

Link copied!