নভেম্বর ৩০, ২০২৪, ১২:০৩ পিএম
সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর ‘আলেপ্পোর অধিকাংশ এলাকা’র নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে দেশটির বিদ্রোহী বাহিনী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)। শনিবার, ৩০ নভেম্বর যুক্তরাজ্যভিত্তিক পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) এ তথ জানায়।
এসওএইচআর এর তথ্য অনুসারে, গত বুধবার থেকে আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ২৭৭ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এর মধ্যে ২০ জন সাধারণ নাগরিক ছিলেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এসওএইচআর-এর বরাতে জানিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আলেপ্পোর অর্ধেকের বেশি এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বিদ্রোহী বাহিনী। দখলকৃত এলাকা উদ্ধারে সেখানে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের তুমুল লড়াই চলছে।
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের পরিচালক রামি আবদুল রহমান বলেন, ‘আলেপ্পো শহরের অর্ধেকই এখন হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) ও এর মিত্র গোষ্ঠীগুলোর নিয়ন্ত্রণে। আরও বলেন, ‘কোনো ধরনের লড়াই এবং একটি গুলিও ছোড়া হয়নি। সরকারি বাহিনী পিছু হটেছে।’
তিনটি সামরিক সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, আলেপ্পো বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং শনিবারের সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিরোধী বিদ্রোহীরা শহরের কেন্দ্রস্থলে পৌঁছে গেছে।
বলা হচ্ছে, ২০১৬ সালে সেনাবাহিনীর দ্বারা বিতাড়িত হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট বাশার-আল আসাদের বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইরত বিদ্রোহীরা এবারই প্রথম আলেপ্পো পৌঁছাতে সক্ষম হলো। এই সময় বিদ্রোহীদের কাছ থেকে আলেপ্পো শহরের দখল নিয়েছিল আসাদ ও তার মিত্র রাশিয়া, ইরান ও আঞ্চলিক শিয়া মিলিশিয়ারা।
গত কয়েক বছরের দেশটির সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের সবচেয়ে বড় অভিযান বলা হচ্ছে একে।
বিবিসি তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)-কে ইসলামপন্থি জঙ্গি গোষ্ঠী হিসেবে উল্লেখ করে বলছে, হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) একটি চ্যানেলে পোস্ট করা ভিডিওতে আলেপ্পো শহরের ভেতরে গাড়িতে বিদ্রোহী যোদ্ধাদের দেখা গেছে।
ভিডিওটি আলেপ্পোর পশ্চিম উপশহরের বলে নিশ্চিত হয়েছে বিবিসি।
সিরিয়ার সরকারি বাহিনী দাবি করেছে, বুধবার এইচটিএস ও সহযোগীদের আক্রমণের পর তারা আলেপ্পো ও ইদলিব প্রদেশের বেশ কয়েকটি শহর উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।
বিবিসির যাচাই করা আরেকটি ভিডিওতে আলেপ্পো বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে দলে দলে লোকজনকে ভারী ব্যাগ বহন করতে দেখা গেছে।
বিদ্রোহীরা যে পথ দিয়ে আলেপ্পো শহরে ঢুকেছে বলে এইচটিএস সমর্থিত চ্যানেলটি দাবি করেছে, সেখান থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে।
সিরিয়ার সরকার জানিয়েছে, আলেপ্পোতে এরই মধ্যে নতুন সেনাদল পৌঁছেছে এবং বিদ্রোহীদের উৎখাত শুরু হয়েছে।
উদ্ভুত পরিস্থিতিতে আলেপ্পো থেকে সব ফ্লাইট বাতিল এবং বিমান বন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে সামরিক সূত্রের বরাতে জানিয়েছে রয়টার্স।
২০১১ সাল থেকে চলা গৃহযুদ্ধে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৫ লাখের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।