ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৪, ০৭:১০ এএম
তৃতীয় বছরে গড়ালো রাশিয়া-ইউক্রেনের সংঘাত। দুই বছর ধরে চলা এই লড়াইয়ে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দু’দেশেরই। যুদ্ধের ময়দানে নিহত হয়েছে দু’পক্ষেরই কয়েক লাখ সেনা। প্রাণ গেছে হাজারও বেসামরিকের। বাস্তুচ্যুত লাখ লাখ মানুষ। সমঝোতা তো দূরের কথা, সময়ের সাথে সাথে ক্রমেই যেন আরও ভয়াবহ হচ্ছে সংঘাত।
যেহেতু কোনো দেশই খুব সহজে পরাজয় স্বীকার করে নেবে না এবং আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পুতিনই আবার ক্ষমতায় থাকবেন বলে মনে হচ্ছে, তাই যুদ্ধ আরও দীর্ঘস্থায়ী হতে যাচ্ছে বলে অনুমান করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা থিঙ্ক ট্যাঙ্ক গ্লোবসেক বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞের মতামত নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন সম্ভাব্য ফলাফল পর্যালোচনা করেছে। সেটাতে সবচেয়ে বেশি যা উঠে এসেছে, তা হলো- ২০২৫ সালেরও বেশি সময় পর্যন্ত যুদ্ধটা দীর্ঘায়িত হবে, যাতে দুই পক্ষেরই প্রচুর হতাহতের ঘটনা ঘটবে ও ইউক্রেন মিত্রদের অস্ত্র সহায়তার উপর নির্ভর করে থাকবে।
আর দ্বিতীয় সম্ভাব্য ফলাফল হলো- বিশ্বের অন্যান্য অংশেও সংঘাত বাড়বে, যেমন মধ্যপ্রাচ্য, চীন-তাইওয়ান ও বলকানদের সঙ্গে রাশিয়ার উত্তেজনা ছড়াবে।
আরও যে দুটি সম্ভাব্য ফলের কথা উঠে এসেছে, যেগুলোর সম্ভাবনা খুবই সামান্য। তার একটা হলো- ইউক্রেন সামরিক দিক থেকে কিছুটা অগ্রসর হবে, কিন্তু যুদ্ধে শেষ করার মতো পরিস্থিতিতে যেতে পারবে না। অথবা, ইউক্রেনের মিত্রদের সমর্থন ফুরিয়ে আসবে ও তারা কিয়েভকে সমঝোতায় যেতে বাধ্য করবে।
তবে অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কী হয় ও একই সঙ্গে অন্যান্য যুদ্ধ বিশেষত ইসরায়েল-হামাস সংঘাত কোনদিকে গড়ায় ও সেটা ইউক্রেন-রাশিয়ার মিত্রদের কীভাবে প্রভাবিত করে, সেসবের উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সংঘাতের কারণে ভুগতে হচ্ছে গোটা বিশ্বকেই। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে জ্বালানি তেল ও খাদ্য রফতানি। যার প্রভাব পড়েছে সবক্ষেত্রে। একদিকে বেড়েছে খাদ্যপণ্যের দাম, অন্যদিকে দেখা দিয়েছে খাবারের সংকট।
সংঘাত বন্ধে কয়েকবার আলোচনার উদ্যোগ নেয়া হলেও তা সফলতার মুখ দেখেনি। উল্টো হামলা জোরদার করেছে রাশিয়া। পশ্চিমা অস্ত্রে পাল্টা জবাব দিয়েছে ইউক্রেনও।
তবে, বিশ্লেষকদের মত, ইসরায়েল-গাজা ইস্যুই এখন পশ্চিমাদের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে। ফলে, ইউক্রেনের প্রতি তাদের সেই সমর্থনে ভাটা পড়তে শুরু করেছে।