যুক্তরাষ্ট্রে তিন ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীকে গুলি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

নভেম্বর ২৭, ২০২৩, ০৯:৩৮ এএম

যুক্তরাষ্ট্রে তিন ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীকে গুলি

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রে তিন ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীকে গুলি করা হয়েছে। শনিবার ( ২৫ নভেম্বর ) সন্ধ্যায় পিস্তল বহনকারী এক ব্যক্তি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ভারমন্ট অঙ্গরাজ্যে ইউনিভার্সিটি অব ভারমন্টের কাছে বারলিংটনে এই তিন শিক্ষার্থীকে গুলি করেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।

গুলিবিদ্ধ ওই তিন ছাত্র হলেন- হিশাম আওয়ারতনী, তাসনিম আহমেদ এবং কিন্নান আবদাল হামিদ। গুলিবিদ্ধদের দুজন মার্কিন নাগরিক এবং তৃতীয়জন যুক্তরাষ্ট্রের বৈধ বাসিন্দা। 

এর মাঝে হিশাম আওয়ারতানি রোড আইল্যান্ডের ব্রাউন ইউনিভার্সিটির ছাত্র। কিন্নান আবদালহামিদ পেনসিলভানিয়ার হ্যাভারফোর্ড কলেজের শিক্ষার্থী। কানেকটিকাটের ট্রিনিটি কলেজে পড়েন তাহসিন আহমেদ। তিনজনই রামাল্লা ফ্রেন্ডস স্কুলের স্নাতক।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই তিন ছাত্র কেফিয়্যাহ পরা অবস্থায় ছিল এবং তারা আরবিতে কথা বলতো। গুলি করার সময়ও তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক কেফিয়্যাহ পরা ছিল। ফিলিস্তিন বিদ্বেষ থেকে এই হামলা উৎসারিত হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ।

‘হেইট ক্রাইম’বা ঘৃণামূলক অপরাধ হিসেবে হামলাটির তদন্ত করার জন্য পুলিশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের পরিবার।

ছাত্রদের হত্যাচেষ্টায় জড়িত ব্যক্তিকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে পুলিশ। সিবিসি নিউজ বলছে, বন্দুকধারী গুলি করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেছে। ফলে তাকে গ্রেফতার করা যায়নি।

ফিলিস্তিনপন্থী আইনি সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর মিডল ইস্ট আন্ডারস্ট্যান্ডিং বলেছে, গুলিবিদ্ধ তিন ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী কেফিয়াহ পরিহিত অবস্থায় আরবিতে কথা বলছিলেন। তখন সন্দেহভাজন হামলাকারী তাঁদের হয়রানির উদ্দেশ্যে চিৎকার করতে থাকেন। 

এক পর্যায়ে তিনজনকে গুলি করে পালিয়ে যান। পুলিশ অবশ্য বলছে, হামলাকারী কোনো কথা না বলেই চারটি গুলি করেছেন।

মিডল ইস্ট আন্ডারস্ট্যান্ডিং-এর মাধ্যমে প্রকাশিত ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের পরিবারের একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এই হামলাকে ঘৃণামূলক অপরাধ হিসেবে বিবেচনাসহ ঘটনার সঠিক তদন্তের জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতি আহ্বান জানাই। হামলাকারীকে বিচারের আওতায় না আনা পর্যন্ত আমরা স্বস্তি পাব না।’

গত ৭ অক্টোবর মধ্যপ্রাচ্যে শুরু হওয়া ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি রক্তপাতের সর্বশেষ তরঙ্গের ফলে যুক্তরাষ্ট্রেও দেখা গেছে ইসলামবিরোধী ও ইহুদি বিদ্বেষের ঘটনা। আর এ রকম পরিপ্রেক্ষিতের কারণেই ঘটনাটিকে ঘৃণামূলক অপরাধ হিসেবে দেখার যৌক্তিকতা বেশি বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।

তদন্তাধীন অবস্থায় এই ঘটনাকে ঘৃণামূলক অপরাধ হিসেবে দেখা যাবে না বলে এক বিবৃতিতে জানান বারলিংটনের পুলিশপ্রধান জন মুরাড। তবে বারলিংটনের মেয়র মিরো ওয়েইনবার্গার বলেছেন, ঘৃণামূলক অপরাধ থেকেই এই ঘটনা ঘটার ইঙ্গিত অনেকটাই প্রকট।

ভারমন্টের সিনেটর এবং সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বার্নি স্যান্ডার্স এ সহিংসতার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “বারলিংটনে ফিলিস্তিনি তিন তরুণের ওপর হামলা হয়েছে। এটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। এখানে বা অন্য কোথাও ঘৃণার কোনো স্থান নেই।”

Link copied!