নভেম্বর ১৭, ২০২৩, ০৬:০০ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, বিশ্বজুড়ে যারা শ্রমিক অধিকার হরণ করবে, শ্রমিকদের ভয়ভীতি দেখাবে এবং আক্রমণ করবে তাদের ওপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা, ভিসা নিষেধাজ্ঞাসহ নানা ধরনের শাস্তি দেবে যুক্তরাষ্ট্র।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন এ ঘোষণা দেন। বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বিশ্বব্যাপী শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করার প্রত্যয় নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো একটি মেমোরেন্ডামে সই করেছেন। বিষয়টিকে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছে হোয়াইট হাউস। এ মেমোরেন্ডাম সইয়ের পরে সানফ্রান্সিসকোর একটি হোটেলে শ্রমিক নেতাদের সামনে এর বিস্তারিত তুলে ধরেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেনের বক্তব্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে তিনি বলেন, শ্রমিকরা আমাদের অবকাঠামো তৈরি, পণ্য উৎপাদন এবং রপ্তানি করে আমাদের প্রিয়জনদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি নতুন শিল্প গড়ে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল এবং পুরো বিশ্বজুড়ে অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ফলে আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং প্রবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনায় এসব শ্রমিকের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। দুর্ভাগ্য হচ্ছে, বিশ্বের অনেক স্থানে শ্রমিকদের এ সুযোগ দেওয়া হয় না। শুধু তাই নয়, কিছু স্থানে শ্রমিকদের মানসম্পন্ন জীবনযাপনকেও অস্বীকার করা হয়, তাদের হয়রানি করা হয় এবং ক্ষতি করা হয়। এমনকি তাদের অধিকার চাইতে গেলে হত্যার শিকার হতে হয়।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারা শ্রমিক নেতা, শ্রমিক সংগঠন ও শ্রম অধিকার নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিদের ভয় দেখায় এবং তাদের ওপর আক্রমণ করে, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।
ব্লিংকেন বলেন, বিশ্বব্যাপী শ্রমিকদের অধিকারকে সক্রিয়ভাবে একীভূত ও উন্নত করার জন্য পাঁচ ধরনের কর্মপরিকল্পনা রয়েছে। এগুলো হচ্ছে- প্রথমত, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শ্রম অধিকারকে সুরক্ষিত করতে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার, শ্রমিক, শ্রম সংগঠন, ট্রেড ইউনিয়ন, সুশীল সমাজ এবং বেসরকারি খাতের সঙ্গে মিলিতভাবে কাজ করবে। এর অংশ হিসাবে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও দূতাবাসকর্মীরা শ্রমিক ও শ্রম ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত হবে। দ্বিতীয়ত, যারা শ্রমিকদের হুমকি-ধমকি দেবে, ভয় দেখাবে, শ্রম ইউনিয়নের নেতা, শ্রম অধিকারের পক্ষে কাজ করা ব্যক্তি, শ্রম সংগঠনের ওপর আক্রমণ করবে তাদের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ, বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা এবং ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে। তৃতীয়ত, দক্ষতাসম্পন্ন শ্রমিকদের জন্য চাকরির সুযোগ বাড়ানোকে অগ্রধিকার দিয়ে বিদেশে শ্রমিকদের অধিকার উন্নত করার জন্য মার্কিন ফেডারেল সরকারের সক্ষমতা বাড়ানো হবে। চতুর্থত, শ্রম অধিকার এবং শ্রমমান উন্নত করতে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশের সরকার এবং জাতিসংঘ, জি-২০ এর মতো বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কাজ করবে। পঞ্চমত, যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব বাণিজ্য চুক্তি এবং সাপ্লাই চেইন যাতে শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে সে লক্ষ্যে মার্কিন প্রচেষ্টা আরও বাড়ানো হবে।
অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, পররাষ্ট্রনীতি চালুর বিষয়ে এটি একটি বাস্তবিক ও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ। এই নীতি সব আমেরিকানের পক্ষে কাজ করবে।