ইউএসএআইডির ১৬০০ কর্মী ছাঁটাই করছে ট্রাম্প প্রশাসন

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৫, ০২:৫০ পিএম

ইউএসএআইডির ১৬০০ কর্মী ছাঁটাই করছে ট্রাম্প প্রশাসন

ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন বলেছে, তারা অন্য দেশে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা পৌঁছে দেওয়া প্রধান সংস্থা ইউএসএআইডির যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত এক হাজার ৬০০ কর্মীকে ছাঁটাই করতে যাচ্ছে।

শীর্ষ পদধারী ও অত্যাবশ্যকীয় কর্মীরা বাদে বাকিদের সবেতন প্রশাসনিক ছুটিতেও পাঠানো হচ্ছে বলে রোববার তারা জানিয়েছে।

দেশের বাইরে প্রভাব বিস্তারে যুক্তরাষ্ট্রের ‘নরম কূটনীতির’ গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ ইউএসএআইডির ডানা কেটে দিতে ধনকুবের ইলন মাস্কের ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি যে উদ্যোগ নিয়েছে, তার অংশ হিসেবেই এ কর্মীদের চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে।  

“দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, আপনি কর্মী সংখ্যা কমানোর যে পদক্ষেপ তার আওতায় পড়েছেন,” চাকরি যাওয়া এক কর্মীকে পাঠানো ইমেইলে এভাবেই বলা হয়েছে; বার্তা সংস্থা রয়টার্স ইমেইলটি যাচাই করে নিশ্চিত হয়েছে।

এই নোট যারা পেয়েছেন তাদের চাকরিচ্যুতি ২৪ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে, বলা হয়েছে ওই ইমেইলে।

রোববার যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলীয় সময় মধ্যরাতের আগে আগে ইউএসএআইডির ওয়েবসাইটে বলা হয়, অত্যাবশ্যকীয় কর্মী বাদে বাকি সকল সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্তদের ছুটিতে পাঠানো হবে, পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত এক হাজার ৬০০ জনের চাকরিও যাবে।

সংস্থাটির কর্মীদের কাছে পাঠানো আগের এক নোটিসে প্রায় ২ হাজার কর্মীকে ছেঁটে ফেলা হবে বলে ইউএসএআইডি জানিয়েছিল।

এ প্রসঙ্গে রয়টার্স হোয়াইট হাউজের মন্তব্য চাইলেও তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া পায়নি।

সরকারি কর্মীদের ইউনিয়নগুলো ট্রাম্প প্রশাসনের উদ্যোগ আটকাতে মামলা করেছিল। তাদের ভাষ্য ছিল, ইউএসএআইডিকে বিলুপ্ত করার লক্ষ্যে প্রশাসন এ কর্মীদের ছুটিতে পাঠাচ্ছে।

কিন্তু শুক্রবার ফেডারেল এক বিচারক ইউএসএআইডির হাজারো কর্মীকে ছুটিতে পাঠাতে ট্রাম্প প্রশাসনের উদ্যোগে পথের কাঁটা সরিয়ে দেন।

ইউএসএআইডির দুজন সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমান, সংস্থার প্রশাসন ও পররাষ্ট্র বিভাগে কাজ করা ৪ হাজার ৬০০-র মতো পেশাদার কর্মীর অধিকাংশকেই ছুটিতে পাঠানো হবে।

“এই প্রশাসন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী (মার্কো) রুবিও যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষতা ও অনন্য সংকট মোকাবেলার সক্ষমতাকে দুর্বল করে অদূরদর্শিতার পরিচয় দিচ্ছেন। যখন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়, মানুষজন বাস্ত্যুচ্যুত হয়, তখন এই ইউএসএআইডি বিশেষজ্ঞদেরই মাঠে নামানো হয়, পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে ও সহায়তা পৌঁছে দিতে তাদেরকেই প্রথমে পাঠানো হয়,” বলেছেন ওই কর্মকর্তাদের একজন মার্সিয়া ওং।

গত মাসের ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েই ট্রাম্প বিদেশে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সকল সহায়তা কার্যক্রমে ৯০ দিনের স্থগিতাদেশ দেন। তাতে ক্ষুধা ও প্রাণঘাতী রোগের বিরুদ্ধে লড়াই থেকে শুরু করে সারা বিশ্বের লাখো বাস্তুচ্যুত মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ সব কার্যক্রম থমকে পড়ে।

ট্রাম্প প্রশাসনের এই স্থগিতাদেশ থেকে ছাড় পায় ৫৩০ কোটি ডলার, যার সিংহভাগই নিরাপত্তা ও মাদকবিরোধী নানান প্রকল্পে যায় বলে ছাড়ের তালিকা পর্যালোচনা করে পেয়েছে রয়টার্স।

স্থগিতাদেশের আগে ইউএসএআইডি তাদের কর্মসূচিগুলোতে বছরে প্রায় ৪ হাজার কোটি ডলার দিতে পারতো; ছাড়ের আওতায় তারা এখন পেয়েছে ১০ কোটি ডলারেরও কম।

Link copied!