অক্টোবর ২৬, ২০২৩, ০১:০১ এএম
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের উন্মুক্ত বিতর্কে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা গাজায় যুদ্ধবিরতি চায় না যুক্তরাষ্ট্র, তাদের চাওয়া ‘মানবিক বিরতি’। অথচ এ বিতর্কে অধিকাংশ সদস্যই ফিলিস্তিনে মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে দেওয়ার জন্য তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে।
চলমান এই যুদ্ধ নিয়ে এখনো ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদ কোনো প্রস্তাব পাশ করতে পারেনি। অন্যদিকে ‘মানবিক বিরতি’ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবে সব দেশকে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ওয়াশিংটন বলেছে, তারা যুদ্ধবিরতি নয়, `মানবিক বিরতির` পক্ষে—যা কম আনুষ্ঠানিক এবং যুদ্ধবিরতির চেয়ে সংক্ষিপ্ত।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে উত্থাপন করা একটি নতুন প্রস্তাবে সমর্থন দিতে আহ্বান জানিয়েছেন নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি। নতুন এই প্রস্তাবের খসড়ায় ‘সব রাষ্ট্রের সহজাত আত্মরক্ষার অধিকারের’ ওপর জোর দেওয়া হবে। সেইসঙ্গে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার আহ্বানও জানানো হবে। গাজায় সহায়তা প্রবেশের জন্য এ প্রস্তাবে ‘মানবিক বিরতি’কে সমর্থন দেবে যুক্তরাষ্ট্র।
বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের রক্ষার ওপরও জোর দিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর জন্য ইসরায়েলকে সম্ভাব্য সব ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এছাড়া গাজায় ত্রাণ সরবরাহ অব্যাহত রাখতে ও বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতির হাত থেকে নিরাপদ রাখতে অবশ্যই ‘মানবিক বিরতি’ কার্যকর করার কথা বিবেচনা করতে হবে।
গত সপ্তাহে এক প্রস্তাবে যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়েছিল। তাতে সমর্থন দিয়েছিল ১২টি সদস্য, কিন্তু ভেটো দিয়েছিল ইসরায়েলের সবচেয়ে কট্টর সমর্থক যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি ছিল, ওই প্রস্তাবে ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারের ওপর যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এর আগে রাশিয়ার উত্থাপন করা এক প্রস্তাবেও ভেটো দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে রাশিয়া এখনও তার আগের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের পক্ষেই অনড় রয়েছে। এ সপ্তাহের শেষ দিকে এ প্রস্তাবের ওপর আবার ভোটাভুটি হতে পারে।
জাতিসংঘের রুশ প্রতিনিধি ভাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, ‘পুরো বিশ্ব আশা করছে যে নিরাপত্তা পরিষদ শিগগিরই গাজায় নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাবে।’
নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী সদস্যের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার ভেটো ক্ষমতা রয়েছে।
একজন সিনিয়র মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, তারা মনে করেন মানবিক বিরতি দিলে গাজায় সহায়তা প্রবেশ করার সুযোগ তো তৈরি হবেই, তার সঙ্গে যুগপৎভাবে ইসরায়েল সামরিক অভিযানও চালিয়ে যেতে পারবে। সেজন্যই তারা যুদ্ধবিরতির বদলে মানবিক বিরতির পক্ষে।