রাম মন্দির নয়, চাকরি খুঁজছেন ভোটাররা: রয়টার্স

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

জুন ৯, ২০২৪, ১০:০৯ এএম

রাম মন্দির নয়, চাকরি খুঁজছেন ভোটাররা: রয়টার্স

গত ৪ জুলাই ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশ হয়েছে। এরই মাত্র ৩ মাস আগে গুজরাটের অযোধ্যায় বিশাল একটি রাম মন্দির উদ্বোধন করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বাবরি মসজিদ ভেঙে মন্দিরটি নির্মাণ করায় বিরোধী মহলে এই নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা ছিল। কিন্তু সব সমালোচনা অগ্রাহ্য করে ওই স্থানেই মহাধুমধামে মন্দিরটি উদ্বোধন করেন নরেন্দ্র মোদি। ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতারা আশা করেছিল, ভারতের ভোটাররা হয়তো রাম মন্দিরের কারণেই বিজেপিকে ভোট দেবে। কিন্তু মন্দির নির্মাণের এই রাজনৈতিক এজেন্ডা খুব একটা কাজ করেনি।

বলা হচ্ছে, ত্রেতা যুগের অবতার রামের জন্মস্থান অযোধ্যায় যেখানে মন্দিরটি নির্মাণ করা হয়েছে, এবারের নির্বাচনের ফলে দেখা যায় যে সেই আসন হাতছাড়া হয়েছে বিজেপির। পার্শ্ববর্তী রাজ্য উত্তরপ্রদেশকেও বিজেপির শক্ত ঘাঁটি বলে ধরা হতো। কিন্তু সেখানেও হোঁচট খেয়েছে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দলটি। রাজ্যটিতে বিজেপির আসন প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।

এদিকে কেন্দ্রে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভে ব্যর্থ হলেও সরকার গঠন করতে যাচ্ছে বিজেপি। আজ নরেন্দ্র মোদির শপথগ্রহণের কথা রয়েছে। এমনই পরিস্থিতিতে অযোধ্যা ও উত্তরপ্রদেশে বিজেপির ভরাডুবির কারণ অনুসন্ধান করেছে বিজেপি। দুই রাজ্যের ভোটাররা বলছেন, বেকারত্ব, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধিসহ আরও বেশ কয়েকটি কারণে বিজেপির হিন্দুত্ববাদী এজেন্ডা এবারের ভোটে কাজ করেনি।

নানকান যাদব নামে ৫৫ বছর বয়সের একজন কৃষক রয়টার্সকে বলেন, “ভগবান রামকে সবাই ভালোবাসে, কিন্তু কাজ ও ইনকাম ছাড়া কী করা সম্ভব?”

যাদব বলেন, “পাঁচজনের পরিবারে আমি একমাত্র উপার্জনকারী। ৩ সন্তানের মধ্যে কেউ লেখাপড়া করছে, কেউ বেকার। গত দুই নির্বাচনে বিজেপিকে ভোট দিলেও এবার আমি বিরোধী সমাজবাদী পার্টিকে ভোট দিয়েছি।”

তিনি আরও বলেন, “নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি ও বেকারত্বকে সামনে রেখে মানুষ ভোট দিয়েছে। আমরা বেকারত্বের ওপর দৃষ্টি ফেরাতে ভোট দিয়েছি।”

অযোধ্যার আরেক বাসিন্দা ২৪ বছর বয়সের মোহাম্মদ শহিদ। অটোরিকশা চালিয়ে মা-বাবা, স্ত্রী ও দুই সন্তানের সংসারের খরচ বহন করেন। একই ভাষ্য তারও।

বিজেপির একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভে ব্যর্থ হওয়ার কারণ উল্লেখ করে বিশ্লেষকরা বলছেন, গ্রামাঞ্চলে চাকরির অভাব ও মুদ্রাস্ফীতিতে সাধারণ ভোটারদের অসন্তোষের কারণে গ্রামাঞ্চলের এক-তৃতীয়াংশ আসনই হারিয়েছে ক্ষমতাসীন বিজেপি।

দীর্ঘদিনের বিজেপি ভোটার ৬৫ বছর বয়সের হিন্দু পুরোহিত কৃষ্ণ শঙ্কর পাণ্ডে নিজের দল সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন, “তারা যা ভোট পেয়েছে, রামের নামেই পেয়েছে। নইলে তাও পেত না।”

Link copied!