আফগানিস্তান থেকে সর্বশেষ মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছে সম্প্রতি ক্ষমতা দখল করা তালেবান। এরপরই তারা দ্রুততম সময়ে নতুন সরকার গঠনের ঘোষণা দিয়েছে।
জানা গেছে, এ নিয়ে দফায় দফায় আলোচনায় বসছেন দলটির ঊর্ধ্বতন নেতারা। মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের আগেই শনিবার( ২৮ আগস্ট) থেকে কান্দাহারে শুরু হয় দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বৈঠক। এ বিষয়ে তালেবানের শীর্ষ নেতা আনাস হাক্কানি আলজাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, নতুন সরকার গঠনের কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
এসময় আনাস হাক্কানি বলেন, সরকার গঠনের ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ কাজ আমরা সম্পন্ন করে ফেলেছি এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অল্প কয়েক দিনের মধ্যে ঘোষণা করতে পারবো।
হাক্কানি আরও বলেন, এখন আমাদের লক্ষ্য নতুন সরকার গঠন করা, আমাদের আস্থা অর্জন করতে হবে তাদের যাদের জন্য আমরা যুদ্ধ করছি। ইসলাম এবং আফগানিস্তানের মানুষের সেবা করাই আমাদের কাজ।
এর আগে সোমবার (৩০ আগস্ট) পর্যন্ত চলা এ বৈঠকে সরকার গঠন ছাড়াও দেশের ভবিষ্যতের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। মঙ্গলবার টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে তালেবান মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ এ বৈঠকের কথা নিশ্চিত করেছেন।
জবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, তালেবান প্রধান হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা-র সভাপতিত্বে কান্দাহার প্রদেশে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিন দিনের আলোচনায় দেশের বর্তমান রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং সামাজিক বিষয়াদি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
জানা গেছে, ইরানের ধাঁচে সরকার গঠন করতে চায় তালেবান। সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ নেতা হতে পারেন দলের প্রধান হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা।
এর আগে তালেবানের এক ঊর্ধ্বতন নেতার বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদ মাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা জানায়, নতুন একটি মন্ত্রিসভা ঘোষণার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে, যাতে অন্তর্ভুক্ত থাকবে ‘রাহবারি শুরা’ বা নেতৃত্বদানকারী কাউন্সিলের সকল সদস্য।
তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ ভয়েস অব আমেরিকাকে জানান, এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন প্রায়। তালেবান নেতা জানান, তালেবান নেতৃত্ব প্রধান সহকারী সিরাজুদ্দীন হাক্কানি এবং অপর সহকারী প্রধান মোল্লা মোহাম্মদ ইয়াকুবকে মন্ত্রিসভার নাম চূড়ান্ত করার দায়িত্ব দিয়েছে।
তিনি জানান, এই মন্ত্রিসভায় ২৬ জন সদস্য থাকতে পারেন এবং যাতে কাউন্সিলের বাইরের লোকজনও সামিল হতে পারেন। সর্বোচ্চ নেতা আখুন্দজাদা নিজে মন্ত্রিসভার সদস্যদের চূড়ান্ত অনুমোদন দেবেন।
মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পরপরই কাবুলজুড়ে ফাঁকা গুলি ছুড়ে আনন্দ উল্লাস প্রকাশ করা হয়। মঙ্গলবার সকালে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কাবুল বিমানবন্দর নিয়ন্ত্রণে নেয় তালেবান। এক টুইট বার্তায় হাক্কানি বলেন, আমরা আবারও ইতিহাস সৃষ্টি করেছি।
এর আগেও তালেবানের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তীকালিন সরকার গঠনের কথা বলা হয়। তালেবানের নতুন সরকারে মানবাধিকার ও নারীর স্বাধীনতার বিষয়গুলো প্রাধ্যান্য পাবে বলে জানা গেছে তবে ইসলামিক আইন অনুসারে।
সূত্র: আলজাজিরা।