এপ্রিল ২২, ২০২২, ০৩:০৫ পিএম
ফিলিস্তিনের জেরুজালেমে অবস্থিত আল আকসা মসজিদ (ইহুদিদের কাছে যা টেম্পল মাউন্ট নামে পরিচিত) প্রাঙ্গণে আবারও ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ইসরাইলী পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় ৩১ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের সময় বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল ছুঁড়ে পুলিশ। পাল্টা জবাব হিসেবে পাথর ছোড়ে ফিলিস্তিনিরা। এ নিয়ে গত ৮ দিনে ৭ বার দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলো।
নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে কিছু ফিলিস্তিনী তরুণ ইসরাইলের পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়ে। এর ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই পুলিশ মসজিদের ভেতরে ঢুকে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল ছোঁড়ে। প্রায় ১ ঘন্টা ধরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে।
প্রায় অর্ধযুগ পরে ইসরাইলে কয়েকটি গুপ্ত হামলা চালায় ফিলিস্তিনের কয়েকটি গোষ্ঠী। গত মাসে চালানো ওইসব হামলায় ১৪ জন ইসরাইলী নিহত হয়, যার ফলে ইসরাইলের দখলকৃত পশ্চিমতীরে বড় ধরণের সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরাইলী পুলিশ। এসব অভিযানে ১৫ জন ফিলিস্তিনী নিহত হন। এরপর থেকে উত্তেজনা বিরাজ করছিলো। গত ১৫ এপ্রিল আল আকসা মসজিদের ভেতরে এবং বাইরে ইসরাইলী পুলিশের সঙ্গে ফিলিস্তিনীদের সংঘর্ষ নতুন করে শুরু হয়। এরপর থেকেই থেকে থেকে সংঘর্ষ চলছে।
নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে,মসজিদ প্রাঙ্গণেই ইহুদিদের বার্ষিক ধর্মীয় অনুষ্ঠান ‘পাসওভার সেডার’ আয়োজন করতে যাচ্ছিলো ইহুদিরা। পাসওভার সেডার মুলত ইহুদিদের বার্ষিক একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান যা মার্চ অথবা এপ্রিলের দিকে অনুষ্ঠিত হয়। সপ্তাহ ধরে চলা এ অনুষ্ঠানে মদ্যপানসহ নাচ-গানের ব্যবস্থা থাকে। মিশরের কাছ থেকে জিশু খ্রিষ্ট্রের মুক্তির দিন হিসেবে এ দিনটিকে পালন করা হয়।
এ পরিকল্পনা ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর ফিলিস্তিনের তরুণরা ইহুদিদের বাধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এ খবর প্রকাশ হওয়ার পর বেশ কয়েকজন ইহুদিকে গ্রেফতার করে ইসরাইলী পুলিশ। ইহুদিদের এ কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে মুসলিম বিশ্ব। বাহরাইন, মরক্কো এবং দ্য ইউনাইটেড আরব আমিরাতের নেতারা বলেছেন, এসব কর্মকান্ডের কারণেই ইসরাইলের নতুন প্রধানমন্ত্রী সংকটে পড়তে পারেন। এ ঘটনার কারণে ইসরাইলের ওপর গাজার জঙ্গিগোষ্ঠী হামলা চালানোর একটা অজুহাত খুঁজে পেয়েছে বলেও ধারণা বিশ্ব নেতাদের। গত সোমবার রাতে ইসরাইলকে লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালায় হামাস। বুধবার এবং বৃহস্পতিবারও আরও কয়েকটি রকেট হামলা চালানো হয়। পরে ইসরাইলের বিমান বাহিনী আকাশ থেকে গাজার কয়েকটি জঙ্গি আস্তানা লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালায়। তবে এসব হামলায় কোন নিহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে বেশ কয়েকজন ইসরাইলী এ ঘটনায় আহত হয়েছেন।
হামাসের মুখপাত্র ফজি বারহুম বলেছেন, ফিলিস্তিনের সংকট সমাধানে ইসরাইলকে নানাভাবে চাপ দেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তবে শান্তিপূর্ণভাবে সংকট সমাধানে হামাস বিশ্বাসী। গত মে মাসে গাজায় ইসরাইল এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যকার সংঘর্ষের ঘটনার পর এখনো ধ্বংস হয়ে যাওয়া স্থাপনাগুলো মেরামতের কাজ করছেন অধিবাসীরা।