এপ্রিল ১২, ২০২৩, ১০:৫৪ এএম
সম্প্রতি ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের বেশ কিছু নথি, মানচিত্র, বিভিন্ন নকশা এবং ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্যও পাওয়া গেছে। এসব গোপন নথিপত্রে উঠে এসেছে, ইউক্রেনয়ি সেনাদের সহায়তায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র,যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশের স্পেশাল ফোর্সের সেনারা কাজ করছেন।
অনলাইনে ফাঁস হওয়া কাগজপত্রের মধ্যে রয়েছে ইউক্রেন যুদ্ধের বিস্তারিত ধারাবাহিক টাইমলাইন এবং অসংখ্য দুর্ভেদ্য সামরিক সংক্ষিপ্ত শব্দসহ কাগজপত্র, যার ওপরে ‘অত্যন্ত গোপনীয়’ শব্দ লেখা রয়েছে।
এসব নথিতে উঠে এসেছে ইউক্রেন ও রাশিয়ার পক্ষে কতজন হতাহত হয়েছে, দু'পক্ষের সামরিক দুর্বলতাগুলো কী এবং বিশেষ করে তাদের সামরিক শক্তির দিকগুলো কী হতে পারে?
এরকম ২০টি নথি বিবিসির হাতে রয়েছে। ইউক্রেনের বাহিনীকে যেসব সরঞ্জাম ও প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে, সেগুলোর বিশদ বর্ণনা রয়েছে এতে। সেই সঙ্গে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে নতুন একটি আক্রমণ পরিচালনা করার জন্য ইউক্রেনের বেশ কিছু ব্রিগেডকে একত্রিত করার বর্ণনাও রয়েছে।
তবে ফাঁস হওয়া গোপন নথিপত্র থেকে বেরিয়ে আসছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। তথ্যে জানা গেছে, পশ্চিমা দেশগুলোর স্পেশাল ফোর্সগুলোর সেনা সদস্যরা গোপনে ইউক্রেনে অবস্থান করছেন।
ফাঁস হওয়া নথিগুলোর মধ্যে ২২ মার্চের একটি নথিতে উল্লেখ বলা হয়েছে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের সহায়তায় যুক্তরাজ্যের ৫০ জন, লাটভিয়ার ১৭ জন, ফ্রান্সের ১৫ জন, যুক্তরাষ্ট্রের ১৪ জন ও নেদারল্যান্ডসের স্পেশাল ফোর্সের একজন সেনা অবস্থান করছেন। তবে কোন অঞ্চলে ওই স্পেশাল ফোর্সের সেনারা অবস্থান করছেন সে বিষয়ে নথিতে উল্লেখ নেই।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইউক্রেনে পশ্চিমা দেশগুলোর স্পেশাল ফোর্সের অল্পসংখ্যক সেনা ইউক্রেনে অবস্থান করলেও এই বিষয়টি বেশ উত্তেচনা সৃষ্টি করতে পারে। পুতিন প্রশাসন এ বিষয়টিকে সামনে এনে দাবি করতে পারে, রুশ সেনারা শুধু ইউক্রেনের সাথে নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্র্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট-ন্যাটোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।
রাশিয়া অবশ্য শুরু থেকেই বলে আসছে ইউক্রেন যুদ্ধে তাদের বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশের সেনারাও লড়ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা দেশগুলো ক্রেমলিনের ওই দাবি অস্বীকার করে আসছে। এবার যুদ্ধ শুরুর ১৪ মাস পরই পুতিন প্রশাসনের এই দাবি সত্য হলো।
এদিকে ইউক্রেনে নিজেদের স্পেশাল ফোর্সের ৫০ জন সেনা থাকার বিষয়টি নিয়ে এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে কোনো মন্তব্য বা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেনি যুক্তরাজ্য। তবে তবে দেশটি জানিয়েছে, ফাঁস হওয়া গোপন নথিগুলোতে ‘মারাত্মক পর্যায়ের ভুল’ তথ্য রয়েছে।
তবে লন্ডন স্বীকার না করলেও ফাঁস হওয়া নথিগুলো আসল বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন। মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বলা হচ্ছে, ফাঁস হওয়া নথিগুলো আসল হলেও কিছু কাঁটছাট করা হয়েছে। বেশ কিছু জায়গায় আসল তথ্য মুছে ফেলে সেখানে অসত্য তথ্য বসিয়ে দিয়েছে।
অন্যদিকে,গোপণ নথি ফাঁস হওয়ার পর প্রথমবারের মতো বিমান হামলার পাশাপাশি পূর্ব ইউক্রেনের প্রধান শহরগুলোতে আর্টিলারি ফায়ার চালিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনীয় সেনাদের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, রুশ সেনারা মঙ্গলবার পূর্ব দোনেৎস্ক অঞ্চলে তাদের জোরালো হামলা চালিয়েছে। ওইসব শহর ভারী বোমাবর্ষণের শিকার হয়েছে।