গরুকে জাতীয় পশু করার পক্ষে সুপারিশ করেছে ভারতের ইলাহাবাদ হাইকোর্ট। বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) টাইমস অফ ইন্ডিয়া জানায়, গরু হত্যার অভিযোগে আটক জাবেদ নামের এক ব্যক্তির জামিন নামঞ্জুর করেন আদালত। এসময় অভিযুক্তের জামিনের আবেদনের শুনানিতে বিচারপতি শেখরকুমার যাদব এ সুপারিশ করেন।
গরুকে জাতীয় পশু করার পক্ষে বিচারপতি শেখরকুমার যাদব বলেন, ‘‘গরু ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। তাই গরুকেই দেশের জাতীয় পশু করা উচিত।’’
জাবেদের জামিন খারিজের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি জানান, গরু সম্পর্কে ভারতীয় সমাজে ভাবাবেগ রয়েছে। অভিযুক্তকে জামিন দেওয়া হলে সামাজিক সম্প্রীতি বিঘ্নিত হবে। ভারতীয় নাগরিকদের মতোই গরুর মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত করতে সংসদ বিল পাশ করিয়ে নতুন আইন প্রণয়নেরও সুপারিশ করেন তিনি।
এছাড়া, বিচারপতি বলেন, ‘‘গরুর ভাল হলে তবেই দেশের ভাল হবে।’’
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালেও হিন্দু ধর্মগুরু ও সাধুদের একটি সভায় বাঘকে সরিয়ে গরুকে জাতীয় পশুর স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি উঠেছিল।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে রাজস্থান হাইকোর্টের বিচারপতি মহেশচন্দ্র শর্মা একটি মামলার শুনানিতে গরুকে ‘‘মা’’ সম্বোধন করে বলেছিলেন, ‘‘গরু হত্যার চেয়ে বড় অপরাধ আর কিছুই হতে পারে না।’’ সংবিধানের ৪৮ ও ৫১এ (জি) ধারা অনুযায়ী গরুকে জাতীয় পশুর আইনি মর্যাদা দেওয়া যেতে পারে বলেও জানান তিনি।
এর আগে ১৯৯৯ সালে মহারাষ্ট্রে গোহত্যার বিরুদ্ধে আইন প্রণয়ন করা হয়। কিন্তু সেটি দীর্ঘ দিন পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরের জন্য তার টেবিলে পড়ে থাকার পর প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি তাতে স্বাক্ষর করেন। ইতিহাস থেকে জানা যায়, মোগল সম্রাট বাবর, হুমায়ুনকে গরু সংরক্ষণের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কেননা, সেটি হিন্দুদের কাছে ‘পবিত্র’ পূজনীয়। কিন্তু যখন থেকে গরুর বিষয়টি রাজনীতিতে অনুপ্রবেশ করেছে, তখন থেকে পরিস্থিতি বেশ অদ্ভুত আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে কেন্দ্রে বিজেপির শাসনক্ষমতা গরু নিয়ে নানারকমের রাজনীতি জমে উঠেছে।
ভারতের কয়েকটি রাজ্যে গরু সংরক্ষণের জন্য কঠোর আইন প্রণয়ন করা হয়েছে এবং গরু জবাইকারীদের জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের প্রস্তাব করা হয়েছে।