মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের উত্থাপিত- ‘বিশ্বের বহুজাতিক প্রযুক্তি জায়ান্ট কোম্পানিগুলোর ওপর আগের চেয়ে বেশি কর আরোপে’র প্রস্তাবে সম্মত হয়ে চুক্তি করতে যাচ্ছে জি-৭ জোটভুক্ত দেশগুলো। এ চুক্তি হলে টেক জায়ান্টদের আয়ের ওপর কমপক্ষে ১৫ শতাংশ কর আরোপ করা যাবে।
শনিবার (৫ জুন) লন্ডনে জি-৭ জোটভুক্ত দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। মহামারি শুরুর পর এই প্রথম এসব দেশের অর্থমন্ত্রীরা মুখোমুখি বসেছিলেন।
তবে এই ১৫ শতাংশ করের হার খুব কম বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অক্সফাম। তারা বলছে, এই ১৫ শতাংশে সম্মত হওয়ায় খুব বেশি পার্থক্য তৈরি হবে না।
গতকাল শনিবারের ওই বৈঠকের আয়োজক ছিলেন যুক্তরাজ্যের চ্যান্সেলর ঋষি সুনাক। তিনি বলেন, এই চুক্তিটি একবিংশ শতাব্দীর জন্য একটি সুদৃঢ় কর ব্যবস্থা তৈরি করবে।’ তিনি আরও বলেন, জি-৭ জোটভুক্ত দেশের অর্থমন্ত্রীরা বছরের পর বছর আলোচনার পর বৈশ্বিক কর ব্যবস্থার সংস্কার ও বৈশ্বিক ডিজিটাল যুগের উপযোগী একটি ঐতিহাসিক চুক্তির জন্য সম্মত হয়েছেন। তাঁরা এটি নিশ্চিত করতে চান যে করের মাধ্যমে সংস্থাগুলো ঠিক অর্থ প্রদান করছে।
মনে করা হচ্ছে এতে ‘ট্যাক্স হ্যাভেন’ হিসেবে পরিচিত নিম্ন করের দেশগুলোতে কোম্পানিগুলোর মুনাফা স্থানান্তরের পদক্ষেপ নিরুৎসাহিত হবে। যদি চুক্তিটি চূড়ান্ত হয়, তবে এটি বিশ্বব্যাপী করের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের প্রতিনিধিত্ব করবে। তবে দাতব্য সংস্থাটি মনে করছে যে করের হার নির্ধারণ করা হয়েছে তা খুবই কম, ফলে সে লক্ষ্যে এটা করা হচ্ছে তা পূরণ হবে না।
তবে অক্সফামের নির্বাহী পরিচালক গ্যাব্রিয়েলা বুচার এই বিষয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় বলছেন, জি সেভেন দাবি করছে তারা কর ব্যবস্থার পরিবর্তন করে একটি নতুন ন্যূনতম করপোরেট করের হার নির্ধারণ করছে। অথচ এটি আয়ারল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরের কর সুরক্ষা দেওয়া দেশগুলোর হারের মতোই হচ্ছে।
তিনি বলেন, যে এই চুক্তিটি অন্যায্য কারণ এর মাধ্যমে দরিদ্র দেশগুলির ব্যয়ে জি-৭ জোটভুক্ত দেশগুলো উপকৃত হবে। এসব দেশে অনেক বড় সংস্থার সদর দপ্তর রয়েছে।
বছরের পর বছর ধরে জায়ান্ট প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো নিজ দেশের উচ্চ হারের কর এড়াতে নিম্ন হারের কর স্বর্গ হিসেবে পরিচিত অফশোর দেশগুলোতে যায়। এ চুক্তির ফলে সেই প্রবণতা কমবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। আট বছর ধরেই এ নিয়ে আলোচনা চলছিল।